বর্তমান আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় ইলেকট্রিসিটি বা বিদ্যুৎ আমাদের জীবনের একটি অতি মূল্যবান অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। বিদ্যুৎ এক প্রকার শক্তি যার সাহায্যে যানবাহন, ক্যান, কম্প্রেসরসহ বিভিন্ন প্রকার মোটর, ইত্যাদি চলে। শুধু তাই নয় আলোকসজ্জা, টেলিগ্রাফ, টেলিফোন, রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, ইন্টারনেট, এমনকি রোবটও বিদ্যুৎশক্তি দিয়ে চালিত হয়। অর্থাৎ তড়িৎ বা বিদ্যুৎ আধুনিক সভ্যতার ভিত্তি বা চাবিকাঠি । আমরা কি জানি, বিদ্যুতের সাহায্যে রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কন্ডিশনার কিভাবে চলে? এই অধ্যায়ে আমরা রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কন্ডিশনারের বিভিন্ন কম্পোনেন্ট (Component)-এর ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক বিষয় সম্পর্কে জানব।
এই অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-
উপর্যুক্ত শিখনফলগুলো অর্জনের লক্ষ্যে এই অধ্যায়ে আমরা আটটি জব সম্পন্ন করব। এই আটটি জবের মাধ্যমে ২টি বাড়ি/লোডের সাহায্যে সিরিজ সার্কিট তৈরি করা, তিনটি বাতি/লোডের সাহায্যে প্যারালাল সার্কিট তৈরি করা, তিনটি বাতি/লোডের মিশ্র সার্কিট তৈরি করা, স্লষ্ট টাইপ, ডি-ফ্রষ্ট টাইপ, নো-ফ্রস্ট/এই ট্রি টাইপ রেক্সিজারেটরের ইলেকট্রিক সার্কিট তৈরি করা, ফুল ওয়েভ ব্রিজ রেক্টিফিকেশন সার্কিট তৈরি করা, ব্রেড বোর্ডে সিরিজ ও প্যারালাল সার্কিট তৈরি করার দক্ষতা অর্জন করব। জবগুলি সম্পন্ন করার আগে প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক বিষয়গুলো জেনে নেই ।
এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার সরঞ্জাম, বৈদ্যুতিক বা ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জামাদি এবং ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্ট সম্পর্কে জানৰ ।
ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম (Personal Protective Equipment- PPE )
কাজ করার সময় যে সকল সরঞ্জাম বা ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করলে নিজেকে মারাত্মক কোন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করা যায় সেগুলিকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম বা পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (সংক্ষেপে PPE ) বলে।
ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জামে যা থাকে -
বৈদ্যুতিক বা ইলেকট্রিক্যাল কাজের জন্য যে সকল বস্ত্র বা মালামাল প্রয়োজন হয় তাকে Electrical Accessories বলে। যেমন- সুইচ, সকেট, হোল্ডার, ফিউজ, সার্কিট ব্রেকার, ব্যাটেন, চ্যানেল, রাওয়াল প্লাগ, লিংক ক্লিপ, সিলিং রোজ, কড়ুইট, শ্যাডেল, সার্কুলার বক্স ইত্যাদি।
অনুসন্ধানমূলক কাজ
তোমার এলাকা অথবা বিদ্যালয়ের আশে পাশের রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং এর ওয়ার্কশপ থেকে নিচে উল্লেখিত কম্পোনেন্টের লোকাল/আঞ্চলিক নাম এবং সঠিক নাম জেনে সঠিক নাম ও কাজ নিচের তালিকায় লেখ ।
ইলেকট্রনিক্স কাজে যে সকল ই ব্যবহার করা হয় তাকে Electronics Component বলে। ইলেকট্রনিক্স কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন কম্পোনেন্ট সমূহ Resistor, Capacitor, Transistor, Inductor Transformer, SCR, DIODE, DIAC, TRIAC, FET, IC, MOSFET ইত্যাদি।
গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্টের প্রতীক (Easential Electronic Symbols)
গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রিক্যাল প্রতীক (Euential Electrical Symbola)
এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা বিদ্যুৎ আবিষ্কারের ইতিহাস, Electricity (বিদ্যুৎ), বৈদ্যুতিক পাওয়ার (Electric Power), শক্তি (Energy), বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যার সমাধান, ওহমের সূত্র ও সূত্রের প্রমাণ, বৈদ্যুতিক পরিবাহী (Electrical Conductor), পরিমাণের বিভিন্ন ধরনের মিটার, অ্যাডোমিটার বা মাল্টিমিটার ক্যালিব্রেট করা সম্পর্কে জানব ।
গ্রীক দার্শনিক স্মীথ হেলস (Smith) লক্ষ্য করেন যে, যখন কোন লোমশ বৰ্ম দিয়ে অ্যাম্বরকে (Amber যা পাইন গাছের শক্ত আঠা) ঘর্ষণ করা হয় তখন তুষের ছোট ছোট টুকরাকে অ্যাম্বর আকর্ষণ করে। তিনি ধারণা করেন লোমশ বর্ষ বর্ষণের ফলে উৎপন্ন অদৃশ্য শক্তি তুষের টুকরাকে আকর্ষণ করে। এ অদৃশ্য শক্তিকে বিদ্যুৎ বলে। সাধারণতঃ উৎপন্ন স্থানেই অবস্থান করে এই বিদ্যুৎ ধ্বংস হয় তাই একে স্থির বিদ্যুৎ বলা হয়। ১৬০০ খ্রিষ্টাব্দে ডঃ গীলবাৰ্ট (Dr. Gilbert) পরীক্ষার মাধ্যমে দেখেন শুধু অ্যাম্বর নয় বরং কাঁচ, রাবার, গাটা পাচার, এবোনাইট, গন্ধক, ইত্যাদি ঘষলেও পূর্বরূপ ক্রিয়া সংঘটিত হয় । এই প্রক্রিয়াকে তড়িতাহিতকরণ বলে। যে বস্তুতে বিদ্যুৎতাহিত হয় তাকে তড়িৎ বা বিদ্যুৎ গ্ৰন্থ বা আহিত বা চার্জিত বস্ত্র বলে। যার কারণে কোন বস্তুতে স্থির তড়িৎ বা তড়িৎক্ষেত্রের সঞ্চার হয় এবং যার গতিতে তড়িৎ প্রবাহ ও চৌম্বকত্বের সৃষ্টি হয় তাকে আধান বা চার্জ (Charge) বলে। ১৭৩৩ খ্রিষ্টাব্দে ফরাসী বিজ্ঞানী ডু ফে (Du. Fay) প্রমাণ করেন যে বিভিন্ন বস্তু হতে উৎপন্ন চার্জের প্রকৃতি এক রকম নয়। একটা অপরটির বিপরীত । তাই চার্জ ২ প্রকার যথা-১। ধনাত্বক চার্জ (Positive Charge) ২। ঋনাত্বক চার্জ (Negative Charge)
(বিদ্যুৎ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে আমাদের পরমানুর গঠন ও বিন্যাস জানতে হবে)
পরমানুর গঠন ও বিন্যাস
ইলেকট্রন তত্ত্ব (Electron Theory)
রসায়নবিদ ও পদার্থবিদগনের মতে পদার্থ মাত্রই অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কনার সমষ্টি। কোন পদার্থ কঠিন, তরল, বায়বীয় যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন তা অগণিত অতি সুক্ষ্ণ কণা দিয়ে গঠিত ।
অণুর সংজ্ঞা (Definition of Mole )
মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা যা ঐ পদার্থের ধর্মাবলী অক্ষুন্ন রেখে স্বাধীনভাবে অবস্থান করতে পারে তাকে অণু বা (Mole) বলে। এক কথায় বলা যায়, মূল পদার্থের গুণাগুণ বিশিষ্ট পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণাকে অণু বলে। একটি অণু আবার অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা দিয়ে গঠিত। তাদের এক একটিকে পরমাণু বলে।
পরমাণুর সংজ্ঞা
মৌলিক পদার্থের তড়িৎ নিরপেক্ষ ক্ষুদ্রতম কণা যা সাধারণত স্বাধীন অস্তিত্বের অধিকারী নয় কিন্তু রাসায়নিক পরিবর্তনে অংশ গ্রহণ করতে পারে তাকে পরমাণু (Atom) বলে। আবার একটি পরমাণুকে ভাঙ্গলে বা বিশ্লেষণ করলে দুই ধরণের কণিকা পাওয়া যায় ।
১. স্থায়ী মূল কণিকা: যে সব মূল কণিকা সব মৌলের পরমাণুতে থাকে, তাদেরকে স্থায়ী মূল কণিকা বলে । স্থায়ী মূল কনিকা তিনটি-
ইলেকট্রন (Electron): সব ধরণের পরমাণুতে কম বেশী ইলেকট্রন থাকে । এটি নেগেটিভ চার্জ যুক্ত, এটিকে ‘e’ প্রতীক দিয়ে প্রকাশ করা হয়। এটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের বাইরে অবস্থান করে। (চিত্র ২.২-দ্রষ্টব্য)
প্রোটন (Proton): প্রোটন পজেটিভ চার্জ যুক্ত। প্রোটনের বৈদ্যুতিক চার্জের পরিমান ইলেকট্রনের চার্জের সমান। এটির প্রতীক 'p '। এটি নিউক্লিয়াসে অবস্থান করে। (চিত্র ২.২- দ্রষ্টব্য)
নিউট্রন (Neutron): ইলেকট্রন ও প্রোটনের মত নিউট্রনও একটি মৌলিক কনিকা বা কণা । নিউট্রনের কোন চার্জ নেই, অর্থাৎ তড়িৎ নিরপেক্ষ। এটির প্রতীক ‘n' । এটি পরমাণুর কেন্দ্রে নিউক্লিয়াসে অবস্থান করে । (চিত্র ২.২- দ্রষ্টব্য)
২.অস্থায়ী মূল কণিকা: যে সব মূল কনিকা কোন কোন মৌলের পরমাণুতে খুবই কম সময়ের জন্য অস্থায়ীভাবে থাকে, তাদেরকে অস্থায়ী মূল কণিকা বলে। যেমন- পাইওন, মিউওন, নিউট্রিনো ও মেসন প্রভৃতি ।
নিউক্লিয়াস
পরমাণুর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিউক্লিয়াস। এটি প্রোটন ও নিউট্রন নিয়ে গঠিত।
পরমাণুর প্রকারভেদ
ইলেকট্রনের পরিমান অনুযারী পরমাণু দুই প্রকার
কোন পরিবাহীর ভেতর দিয়ে গতিশীল ইলেকট্রন প্রবাহের ফলে সে শতির সৃষ্টি হয় তাকে বিদ্যুৎ বা Rlectricity বলা হয়। অর্থাৎ বিদ্যুৎ এক প্রকার অদৃশ্য শক্তি বা আলো, তাপ, শব্দ, গতি উৎপন্ন করে এবং অসংখ্য বা কাজ সমাধান করে। বিদ্যুৎ দুই প্রকার ।
স্থির বিদ্যুৎ (Static Electricity)
এই বিদ্যুৎ অনাস্থানেই অবস্থান করে, কোন প্রকার অবস্থান পরিবর্তন করে না বলেই এর নাম দেয়া হয়েছে স্থির বিদ্যুৎ । যেমন- স্বর্ণ বিদ্যুৎ (Frictional Electricity)
চল বিদ্যুৎ(Current Electricity)
এই শ্রেণীর বিদ্যুৎ একস্থান হতে অন্যস্থানে চলাচল করতে পারে বিধায় এর নাম দেয়া হয়েছে চল বিদ্যুৎ । তেল, গ্যাস, কয়লা পুড়িয়ে এবং পানির স্রোতকে কাজে লাগিয়ে জেনারেটরকে চালনা করে আমরা এই বিদ্যুৎপেয়ে থাকি।
বৈদ্যুতিক কারেন্ট ও এর প্রবাহের দিক (Electric Current and Direction of Current Flow) আমরা জানি, বিদ্যুৎ প্রবাহের দিক ইলেকট্রন প্রবাহের বিপরীত দিকে বলে ধরা হয়। অর্থাৎ ইলেকট্রন যেদিকে প্রবাহিত হবে বিদ্যুৎ তার বিপরীত দিকে প্রবাহিত হবে। পাশের চিত্র ব্যাটারীর Negative Positive প্রাপ্ত হতে তার নিরে যদি কোন লোডে সাপ্লাই দেয়া হয় তবে ইলেকট্রন ব্যাটারীর নেগেটিভ প্রাপ্ত হতে তারের মধ্য দিয়ে পজেটিভ প্রান্তের দিকে ধাবিত হবে । ফলে ব্যাটারীর পজেটিভ প্রান্ত হতে নেগেটিভ প্রান্তের দিকে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে থাকবে।
কারেন্ট (Current)
কোন পরিবাহীর ভেতর দিয়ে ইলেকট্রন প্রবাহের হারকে কারেন্ট বলে। এটি পরিমাপের একক অ্যাম্পিয়ার। কারেন্টকে ইংরেজী অক্ষর 'T' দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। কারেন্ট পরিমাপক যন্ত্রের নাম অ্যামিটার।
কারেন্টের প্রকারভেদ
প্রবাহ অনুসারে বৈদ্যুতিক কারেন্টকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় -
ডাইরেক্ট কারেন্ট (Direct Current)
যে কারেন্ট সবসময় একই দিকে প্রবাহিত হয় এবং যার মান নির্দিষ্ট থাকে তাকে ডাইরেক্ট কারেন্ট বা D C বলে। এই কারেন্ট সব সময় সরল রেখার মত প্রবাহিত হয়। এটির চিহ্ন (-)। যেমন- ব্যাটারীর কারেন্ট।
অল্টারনেটিং কারেন্ট (Alternating Current)
যে কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার সময় নির্দিষ্ট নিয়মমত দিক পরিবর্তন করে এবং যার মান প্রতি মুহুর্তে পরিবর্তনশীল থাকে তাকে অল্টারনেটিং কারেন্ট বা AC বলে। এই কারেন্ট সব সমর ঢেউয়ের মত (Wave Shape) করে চলে। অল্টারনেটর হতে Alternating Current পাওয়া যায়। বড় বড় এ.সি জেনারেটরগুলোকে অল্টারনেটর বলা হয়। অল্টারনেটিং কারেন্টের চিহ্ন (~~)।
ইউনিট রূপান্তর (Unit Conversion)
১ মিলি অ্যাম্পিয়ার (mA) = ০.০০১ বা ১০-৩ অ্যাম্পিয়ার
১ মাইক্রো অ্যাম্পিয়ার (A) =০.০০০০০১ বা ১০-৬ অ্যাম্পিয়ার
১ কিলো অ্যাম্পিয়ার (KA) = ১০০০ বা ১০৩ অ্যাম্পিয়ার
১ মেগা অ্যাম্পিয়ার (MA) = ১০০০০০০ বা ১০৬ অ্যাম্পিয়ার
ভোল্টেজ (Voltage) বা বৈদ্যুতিক চাপ (Electric Pressure)
কোন পরিবাহীর পরমানুগুলোর ইলেকট্রনসমূহকে স্থানচ্যূত করতে যে বল বা চাপের প্রয়োজন হয় তাকে ভোল্টেজ (Voltage) বা বিদ্যুৎ চালক বল (IMF) বলে । অর্থাৎ বৈদ্যুতিক চাপকে ভোল্টেজ বলে। ভোল্টেজকে ইংরেজী অক্ষর 'V দিয়ে প্রকাশ করা হয়। ভোল্টেজ পরিমাপের একক হলো 'ভোট' এবং ভোল্টেজ পরিমাপের যন্ত্রটিকে বলা হয় ভোল্ট মিটার।
ভোল্টেজ ইউনিট (Voltage Unit)
১ (কিলো ভোল্ট) KV=১০০০V
১ (মিলি ভোল্ট) mV = ১ / ১০০০ V
১ (মাইক্রোভোল্ট) µ V=১/১০০০০০০ V
১ ভোল্ট = ১/১০০০ KV=১০০০mV
রেজিস্ট্যান (Resistance)
কোন পরিবাহীর ভেতর দিয়ে বৈদ্যুতিক কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার সময় ঐ পরিবাহী পদার্থের যে বৈশিষ্ট্য বা ধর্মের কারণে কারেন্ট প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয় তাকে রেজিষ্ট্যান্স বলে। রেজিস্ট্যালকে ইংরেজী অক্ষর 'R' দিৱে প্রকাশ করা হয়। এটির একক হল ওহম এবং রেজিস্ট্যাল পরিমাপের যন্ত্রটিকে বলে ওহম মিটার।
রেজিস্ট্যান্স দুই প্রকার -
Variable Resistance
যে রেজিস্ট্যান্সের মান পরিবর্তনশীল বা যে রেজিস্ট্যান্সের মান পরিবর্তন করা যায় তাকে Variable Resistance বলে। রেডিও, টেলিভিশন, টেপ রেকর্ডার ইত্যাদির অনিয়ম কন্ট্রোলের জন্য এই ধরণের রেজিস্টর ব্যবহার করা হয়।
Fixed Resistance
যে রেজিস্ট্যান্সের মান সব সময় স্থির থাকে তাকে ফিক্সড রেজিস্টর বলে। ইলেকট্রনিক্সের সকল প্রকার সার্কিটে নির্দিষ্ট মাত্রায় ভোল্টেজ ড্রপ করানোই এর কাজ ।
ক্যাপাসিট্যান্স (Capacitance)
ক্যাপাসিটরের চার্জ ধরে রাখার ক্ষমতাকে ক্যাপাসিটরের ক্যাপাসিট্যান্স বলে। ক্যাপাসিট্যান্সের একক ফ্যারাড । একে ইংরেজি অক্ষর F দিয়ে প্রকাশ করা হয় ।
যে হারে কোন বৈদ্যুতিক বর্তনীতে ইলেকট্রন প্রবাহিত হয়ে কাজ সম্পন্ন হয় তাকে বৈদ্যুতিক পাওয়ার বলে। আবার অন্য ভাবে বলা যায়। কারেন্ট এবং ভোল্টেজের গুণফলকে পাওয়ার বলে। এটিকে P দিয়ে প্রকাশ করা হয়। এটির একক ওয়াট পাওয়ার পরিমাপক যন্ত্রের নাম ওয়াট মিটার ।
বিভিন্ন পদ্ধতিতে পাওয়ার বা ক্ষমতার একক
C. G.S (Centigrade Gram Second) পদ্ধতিতে পাওয়ারের একক ‘ওয়াট’
F.P.S (Foot Pound Second) পদ্ধতিতে পাওয়ারের একক ‘হর্স পাওয়ার (Horse Power)
এক হর্স পাওয়ার = ৭৪৬ ওয়াট।
ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার অপচয়
কাজের জন্য প্রয়োজন শক্তি । সুতরাং বৈদ্যুতিক কাজের জন্যও প্রয়োজন বৈদ্যুতিক শক্তি । বিভিন্ন কাজের জন্য বা কাজ করার সময় বৈদ্যুতিক শক্তি অন্য শক্তিতে রূপান্তর হয়। এ প্রকার রূপান্তরকে ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার ব্যয় বা অপচয় বলে । বিদ্যুৎ যখন রোধকের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় তখন রোধক উত্তপ্ত হয়। তাপের কারণে তা উত্তপ্ত হয়ে থাকে । বিদ্যুৎ শক্তিই এ তাপের উৎস। বিদ্যুৎ শক্তির একাংশ তাপ শক্তিতে রূপান্তরের কারণে এরূপ ঘটেছে। সুতরাং রোধকে উৎপন্ন তাপের কারণে পাওয়ার অপচয় ঘটে । তাপে বায়িত (রূপান্তরিত) বিদ্যুৎ শক্তিই সার্কিটে পাওয়ারের অপচয় । কোন ক্রমেই এ অপচয় রোধ করা সম্ভব নয় ।
ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার অপচয়ের কারণসমুহ
১। গ্রাউন্ডিং বা আর্থ: মাটি বা ভূমিতে পাওয়ার অপচয় ;
২। লিকেজ: বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিভিন্ন লিকেজের জন্য পাওয়ার অপচয়;
৩। শর্ট সার্কিট: শর্ট সার্কিটজনিত পাওয়ার অপচয়;
৪। সিস্টেম লস: সিস্টেমে পাওয়ার ব্যবহারের জন্য অপচয়;
৫। ইলেকট্রিক্যাল লোড: লোডে পাওয়ার ব্যয়ের জন্য অপচয় ।
উদাহরণস্বরূপ একটি বাল্বে ২২০ ভোল্ট ও ৬০ ওয়াট লেখার অর্থ হচ্ছে বাতিটিকে ২২০ ভোল্ট প্রবাহ লাইনে সংযোগ করলে ৬০ ওয়াট শক্তি খরচ হবে।
কোন বর্তনীর বৈদ্যুতিক পাওয়ার এবং ঐ পাওয়ার বর্তনীতে যত সময় যাবত কার্যরত থাকে ঐ সময়ের গুণফলকে বৈদ্যুতিক শক্তি বলে। অথবা সময়ের সাথে ক্ষমতার গুণফলকে শক্তি বা এনার্জি বলে। বৈদ্যুতিক এনার্জির ব্যবহারিক একক হল ওয়াট আওয়ার। এনার্জি মিটার দিয়ে শক্তি পরিমাপ করা হয় ।
হর্স পাওয়ার
কোন ঘূর্ণনশীল যন্ত্রের যান্ত্রিক ক্ষমতা সাধারণত হর্স পাওয়ারে পরিমাপ করা হয়। কোন যন্ত্র প্রতি সেকেন্ডে ৫৫০ পাউন্ড ওজন বিশিষ্ট কোন বোঝা (Load) কে এক ফুট উপরে উঠাতে যে শক্তি খরচ হয় তাকে এক হর্স পাওয়ার বলে।
ওয়াট
এক ভোল্ট চাপের পার্থক্যে এক অ্যাম্পিয়ার কারেন্ট প্রবাহিত হতে যে পাওয়ার অপচয় হয় তা-ই এক ওয়াট।
বৈদ্যুতিক শক্তি
কোন বস্তুর কাজ করার সামর্থকে এটির শক্তি বা এনার্জি বলে। অথবা, বৈদ্যুতিক ক্ষমতা বা পাওয়ার কোন বর্তনীতে যত সময় ধরে কাজ করে, সে সময়ের সাথে বৈদ্যুতিক পাওয়ারের গুনফলকে বৈদ্যুতিক শক্তি বা এনার্জি বলে ।
এই শক্তির পরিমান নির্ণয় করতে হলে পাওয়ার বা ক্ষমতাকে সময় দিয়ে গুণ করতে হয়।
অর্থাৎ Energy (E) = I × V × T ( watt-second )
বৈদ্যুতিক শক্তির ছোট এককের নাম ওয়াট-সেকেন্ড এবং বড় এককের নাম কিলোওয়াট-আওয়ার। এটি ওয়াট আওয়ারের চেয়ে ১০০০ গুণ বড়। এক কিলোওয়াট আওয়ারকে এক ইউনিট ধরা হয়। সুতরাং ১ ইউনিট = ১০৩ ওয়াট আওয়ার = ১ কিলোওয়াট-আওয়ার। অর্থাৎ ১০০০ ওয়াট লোড এক ঘন্টা চললে যে পরিমান বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যায় হয় তাকে এক ইউনিট বলে। শক্তি পরিমাপক যন্ত্রের নাম এনার্জি মিটার।
সমস্যা: ১
একটি বাড়িতে ১০০ ওয়াটের ৪টি বাতি, ৪০ ওয়াটের ৫টি টিউবলাইট এবং ১ অশ্বশক্তির একটি পানির পাম্প আছে। ঐ বাড়িতে ২২০ ভোল্ট সরবরাহ আছে। লোডগুলি প্রতিদিন গড়ে ৮ ঘন্টা করে চললে একমাসে ঐ বাড়ির বৈদ্যুতিক বিল কত হবে? (প্রতি ইউনিটের দাম ৪.০০ টাকা)
সমাধান:
১০০ ওয়াটের ৪টি বাতির জন্য মোট পাওয়ার খরচ= (১০০ x ৪) ওয়াট = ৪০০ ওয়াট
৪০ ওয়াটের ৫টি টিউব লাইটের জন্য মোট পাওয়ার খরচ= (৪০ × ৫) ওয়াট = ২০০ ওয়াট
১ হর্স পাওয়ারের ১টি পাম্পের মোট পাওয়ার খরচ= (৭৪৬ × ১) ওয়াট ৭৪৬ ওয়াট (১ হর্স পাওয়ার = = ৭৪৬ ওয়াট)
সর্বমোট = ৪০০ ওয়াট +২০০ ওয়াট +৭৪৬ ওয়াট=১৩৪৬ ওয়াট
অর্থাৎ ১৩৪৬/১০০০ = ১.৩৪৬ কিলোওয়াট
প্রতিদিনের জন্য মোট পাওয়ার খরচ= (১.৩৪৬ × ৮) কিলোওয়াট / আওয়ার = ১০.৭৬৮ কিলোওয়াট/আওয়ার
১ মাসে (৩০ দিনে) ঐ বাড়ির মোট পাওয়ার খরচ= (১০.৭৬৮ × ৩০) কিলোওয়াট/আওয়ার = ৩২৩.০৪ কিলোওয়াট/আওয়ার
১ মাসে (৩০ দিনে) ঐ বাড়ির বৈদ্যুতিক বিল=(৩২৩.০৪ × ৪) টাকা=১২৯২.১৬ টাকা ।
সমস্যা: ২
একটি বৈদ্যুতিক হিটার ২২০ ভোল্ট সরবরাহ লাইন হতে ১০ অ্যাম্পিয়ার বিদ্যুৎ গ্রহণ করে। হিটারটিতে কি হারে শক্তি ব্যায় হয়? যদি হিটারটিকে ৫ ঘন্টাকাল চালনা করা হয়, তবে কত কিলোওয়াট/ঘন্টা শক্তি খরচ হবে?
সমাধান:
এখানে ভোল্টেজ, V = ২২০ ভোল্ট, কারেন্ট, I = ১০ অ্যাম্পিয়ার, P =?
প্রবাহকাল = ৫ ঘন্টা, ব্যয়িত শক্তি, W =?
আমরা জানি যে, P = VI = ২২০ × ১০ = ২২০০ ওয়াট
W = Pt = ২২০০ × ৫ ওয়াট-ঘন্টা = ১১০০০ /১০০০ Kwh = ১১ Kwh
সমস্যা:৩
একটি বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি যখন গরম হয় তখন ২৩০ ভোল্ট সরবরাহ লাইনে এর রেজিষ্ট্যান্স দাড়ায় ১০০ ওহম। এই অবস্থায় ৩ ঘন্টায় কত বৈদ্যুতিক এনার্জি খরচ হবে। প্রতি ইউনিটের দাম যদি ২.০০ টাকা হয় তবে ১৯৯০ সনের ফেব্রুয়ারী মাসের বিল কত হবে?
সমাধান:
ইস্ত্রির কারেন্ট I = ২৩০/১০০ = ২.৩ অ্যাম্পিয়ার
ইস্ত্রির পাওয়ার খরচ =I2R = (২.৩ )২ x ১০০ = ৫২৯ ওয়াট
ইস্ত্রির এনার্জি খরচ = পাওয়ার x সময় = ৫২৯ × ৩ = ১৫৮৭ ওয়াট-আওয়ার = ১.৫৮৭ কিলো-ওয়াট আওয়ার।
১৯৯০ সনের ফেব্রুয়ারী মাসের বিল = ১.৫৯ × ২ × ২৮ = ৮৯.০৪ টাকা।
সমস্যা: ৪
একটি বাড়ীতে ৬০ ওয়াট এর ৩টি বাতি, ১০০ ওয়াট এর ২টি বাতি, ৮০ ওয়াট এর ২টি পাখা এবং ১০০০ ওয়াট এর একটি ইস্ত্রি আছে। প্রতিটি গড়ে দৈনিক ৩ ঘন্টা করে কাজ করে। যদি সরবরাহ ভোল্টেজ ২৩০ ভোল্ট হয় তবে সার্কিটে মোট কত কারেন্ট প্রবাহিত হবে এবং প্রতি ইউনিট ১.৫০ টাকা হলে ১৯৯০ জানুয়ারী মাসের বিল কত হবে?
সমাধান
৩টি ৬০ ওয়াটের বাতির মোট ওয়াট = ৬০ × ৩ = ১৮০ ওয়াট
২টি ১০০ ওয়াটের বাতির মোট ওয়াট = ১০০ × ২ = ২০০ ওয়াট
২টি ৮০ ওয়াটের পাখা মোট ওয়াট = ৮০ × ২ = ১৬০ ওয়াট
১টি ১০০০ ওয়াটের ইস্ত্রির মোট ওয়াট = ১০০০ × ১ = ১০০০ ওয়াট
মোট ওয়াট = ১৫৪০ ওয়াট।
আমরা জানি, P = VI
সুতরাং I = P/V = 1540 / 230 = ৬.৬৯৬ অ্যাম্পিয়ার
একদিনে মোট এনার্জি খরচ = ১৫৪০ × ৩ = ৪.৬২ কিলোওয়াট আওয়ার ১৯৯০ সনের জানুয়ারী মাসে ঐ বাড়ীর বিল হবে = ৪.৬২ ×১.৫০ × ৩১ = ২১৪.৮৩ টাকা ।
জার্মান বিজ্ঞানী জর্জ সাইমন ওহম ১৮২৭ খৃষ্টাব্দে বৈদ্যুতিক চাপ (Voltage), বৈদ্যুতিক কারেন্ট এবং পরিবাহীর রেজিস্ট্যান্সের মধ্যে যে গাণিতিক সম্পর্ক নির্ণয় করেন তাই ওহমের সূত্র নামে পরিচিত।
ওহমের সূত্রের ব্যাখ্যা
স্থির তাপমাত্রায় কোন পরিবাহীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট, ঐ পরিবাহীর দু'প্রান্তের ভোল্টেজের পার্থক্যের সাথে সমানুপাতিক এবং রেজিষ্ট্যান্সের উল্টানুপাতিক । অর্থাৎ কোন নির্দিষ্ট লোড (Load) এ রেজিস্ট্যান্সের মান অপরিবর্তিত রেখে ভোল্টেজের মান বাড়ালে সেই আনুপাতিক হারে কারেন্ট বেড়ে যাবে অর্থাৎ, I <math xmlns="http://www.w3.org/1998/Math/MathML"><mo>∞</mo></math> V এবং ভোল্টেজ স্থির রেখে রেজিষ্ট্যান্সের মান বাড়ালে কারেন্টের মান কমবে অর্থ্যাৎ, I<math xmlns="http://www.w3.org/1998/Math/MathML"><mo>∞</mo></math>1/R
এই সূত্রটি শুধু D.C সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য প্রযোজ্য, A.C এর ক্ষেত্রে আংশিক সত্য। তাপের মান পরিবর্তনশীল হওয়ায় এ তত্ত্বটির সীমাবদ্ধতা আছে। কারণ তাপের পরিবর্তনের ফলে পদার্থের রেজিষ্ট্যান্সের মান পরিবর্তিত হয় ।
নির্দিষ্ট লোডে ওহমের সূত্রের প্রমাণ
ওহমের সূত্রানুসারে স্থির তাপমাত্রার একই লোডের ক্ষেত্রে ভোল্টেজ পরিবর্তনের সাথে সার্কিটের বিদ্যুৎ প্রবাহ সমানুপাতিকভাবে পরিবর্তিত হবে। নিচের উদাহরণ এর মাধ্যমে সত্যতা প্রমান করা হল-
পরীক্ষা দু'টি হতে দেখা যায় নির্দিষ্ট লোড ১১ ওহম এবং ভিন্ন ভিন্ন ভোল্টেজ ২২০ ও ১১০ ভোল্টের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন যথাক্রমে ২০ ও ১০ অ্যাম্পিয়ার । অর্থাৎ, ভোল্টেজের পরিবর্তনের সাথে বিদ্যুৎ প্রবাহ পরিবর্তনশীল । অতএব ওহমের বক্তব্যটি সঠিক (প্রমাণিত)।
পৃথিবীতে ১০৫টি মৌলিক পদার্থ এবং অগণিত যৌগিক পদার্থ রয়েছে। এর মধ্যে সকল ধাতব পদার্থ কম বেশি বিদ্যুৎ পরিবাহী। কোন কোন পদার্থে খুব বেশি এবং কোন কোন পদার্থে অতি সামান্য পরিমান বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারে। আবার এমন কিছু পদার্থ আছে যার মাধ্যমে আদৌ বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারে না।
পরিবাহী (Conductor)
যে সব পদার্থের ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ চলাচল করতে পারে তাকে পরিবাহী বা Conductor বলে ।
পরিবাহী ধাতুর নিচে উল্লেখিত গুণাগুণ থাকা প্রয়োজন-
রেজিষ্ট্যান্স বা বাধার দিক থেকে পরিবাহী তিন প্রকার-
সুপরিবাহী (Good Conductor)
যে সব পরিবাহীর ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ সহজে চলাচল করতে পারে, কোন প্রকার বাধার সম্মুখীন হয় না তাকে সুপরিবাহী (Good Conductor) বলে। যেমন- সোনা, রূপা, তামা, দস্তা, পারদ ইত্যাদি।
অর্ধ-পরিবাহী (Semi - Conductor)
যে সব পদার্থের ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ সহজে চলাচল করতে পারে না, কিছুটা বাধার সম্মুখীন হয়, তাকে অর্ধ- পরিবাহী বা Semi-Conductor বলে। অর্থাৎ এটি পুরোপুরি পরিবাহীও নয় আবার পুরোপুরি অপরিবাহীও নয়। যেমন- কার্বন, সিলিকন, জার্মেনিয়াম ইত্যাদি (আপেক্ষিক রেজিষ্ট্যান্স-১০-৪ ওহম) ।
অপরিবাহী (Insulator or Non-Conductor)
যে সব পদার্থের ভেতর দিয়ে ইলেকট্রন একেবারেই চলাচল করতে পারে না তাকে অপরিবাহী বা Insulator বলে। যেমন- রাবার, প্লাষ্টিক, চীনামাটি, ফাইবার, এ্যাবোনাইট, কাঁচ ইত্যাদি (আপেক্ষিক রেজিষ্ট্যান্স-১০-৪ ওহম) ।
পরিবাহী পদার্থের প্রয়োজনীয়তা
বৈদ্যুতিক শক্তি বা এনার্জি বিতরণের ক্ষেত্রে পরিবাহীর ভূমিকা অপরিসীম। পরিবাহী পদার্থের তৈরি তার (Wire) ও ক্যাবল সাধারণত বিদ্যুৎ পরিবাহী মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পরিবাহীর আয়তন এবং প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল মূলত প্রবাহিত বিদ্যুৎ শক্তির পরিমাণের উপর নির্ভর করে নির্ধারণ করতে হয়।
অপরিবাহী পদার্থের প্রয়োজনীয়তা
বিদ্যুৎ বণ্টন ব্যবস্থায় দু'টি বিপরীত তড়িৎ চার্জ পরিবাহকের মধ্যে বিদ্যুৎ ক্ষরণ হতে পারে । আবার পরিবাহক ও মাটির মধ্যেও বিদ্যুৎ ক্ষরণ হতে পারে । এ বিদ্যুৎ ক্ষরণ বন্ধ করার জন্য অপরিবাহী পদার্থ ব্যবহারের প্রয়োজন হয় । যেমন-ক্যাবলের উপর ইন্সুলেশন, বিদ্যুৎ লাইনে ব্যবহৃত কাঁচের বা চীনামাটির তৈরি পোরসেলিন ইত্যাদি। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জামে উন্নতমানের ইন্সুলেশন ব্যবহার করা আইনগত বিধান ।
পরিবাহী ও অপরিবাহী পদার্থের মধ্যকার পার্থক্য
পরিবাহী | অপরিবাহী |
পরিবাহীর মধ্যে স্বাভাবিকভাবে প্রবাহিত হয়। | অপরিবাহীর মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহে বাধা পায় বা বিদ্যুৎপ্রবাহিত হতে পারে না । |
পরিবাহীর রেজিস্ট্যান্স খুবই কম। | অপরিবাহীর রেজিস্ট্যান্স খুবই বেশি। |
পরিবাহী মূলত বিদ্যুৎ প্রবাহের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। | অপরিবাহী মূলত বিদ্যুৎ প্রবাহের বাধা হিসেবে কাজ করে। |
বিদ্যুৎ পরিবাহী ও অপরিবাহী পদার্থের ভিন্ন ভিন্ন ভাবে নিচে তালিকা আকারে দেখান হল-
বিদ্যুৎ সুপরিবাহী পদার্থের তালিকা
১. সোনা | ৫. লোহা | ৯. ব্রোঞ্জ | ১৩. ক্যাডমিয়াম | ১৭. ফসফরাস |
২. রুপা | ৬. দস্তা | ১০. স্টিল | ১৪. ক্রোমিয়াম | ১৮. সিলভার কপার সংকর |
৩. তামা | ৭. নিকেল | ১১. রাং | ১৫. ম্যাঙ্গানিজ | ১৯. সিসা |
৪. অ্যালুমিনিয়াম | ৮. পিতল | ১২. টাংস্টেন | ১৬. প্লাটিনয়েড | ২০. পারদ প্রভৃতি |
বিদ্যুৎ অর্ধ-পরিবাহী পদার্থের তালিকা
বিদ্যুৎ অপরিবাহী পদার্থের তালিকা
পরিবাহী, অর্ধ-পরিবাহী ও অপরিবাহী পদার্থের ব্যবহার
যে যন্ত্রের সাহায্যে কারেন্ট, ভোল্টেজ ও রেজিষ্ট্যান্স পরিমাপ করা যায় তাকে অ্যাভোমিটার বলে । এই মিটারের সাহায্যে একের অধিক ইলেকট্রিক্যাল রাশিকে পরিমাপ করা যায় তাই একে মাল্টিমিটার বলে। AVO শব্দটি Ampere এর প্রথম অক্ষর A, Volt মিটারের প্রথম অক্ষর V এবং Ohms মিটারের প্রথম অক্ষর O নিয়ে গঠিত হয়েছে।
ব্যবহার
এই মিটারকে অ্যামিটার, ভোল্টমিটার ও ওহম মিটার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এই মিটারের সাহায্যে AC ও DC উভয় ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়। এই মিটার ব্যবহার করার জন্য আলাদা সোর্স ব্যবহার করা হয় বলে এর সাহায্যে উচ্চতর রেজিট্যান্স (M2 এর উপরে) ইন্ডাকট্যান্স এবং ক্যাপাসিট্যান্স পরিমাপ করা যায়।
অ্যাভোমিটার বা মাল্টিমিটার ব্যবহারের নিয়ম-
অ্যাডোমিটারের বিভিন্ন অংশের নাম-
অ্যাডোমিটার ক্যালিব্রেট
মিটারের কাটা সাধারণ অবস্থায় শূন্য "০" অবস্থানে থাকে। বিভিন্ন সমস্যার কারণে এটি উপরে বা নিচে নেমে যেতে পারে। এই অবস্থার যদি আমরা পরিমাপ করি তাহলে সঠিক মাপ পাব না। এই সমস্যা সমাধান করতে অ্যাডোমিটার ক্যালিব্রেট করতে হবে।
অ্যাডোমিটার ক্যালিব্রেট করার পদ্ধতি -
১। সিলেক্টর সুইচকে ওহম পজিশনে আনি;
২। মিটার প্রোব দুইটি যথাস্থানে স্থাপন করি;
৩। মিটারের পাঠ শূন্য ”০” অবস্থানে আছে কিনা দেখি;
৪। শূন্য "০” অবস্থানে না থাকলে ব্যালেন্স কি/এ্যাডজাস্টিং ক্রু ঘুরিয়ে কাঁটা শূন্য অবস্থানে আনি ।
একই নিয়মে অন্যান্য মিটারগুলো ক্যলিব্রেট করে নিচের ছকটি পূরণ করি
এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা বৈদ্যুতিক সুইচ, সুইচের প্রকারভেদ, সুইচের ব্যবহার ক্ষেত্র, কম্পোনেন্ট টেস্ট করা সম্পর্কে জানব এবং একটি কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে কম্পোনেন্ট পরীক্ষা করে ভালো মন্দ যাচাই করতে পারব।
সুইচ সবার কাছে পরিচিত একটি শব্দ । সুইচ এক ধরণের কন্ট্রোলিং ডিভাইস, যার সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক লোডের বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রন করা হয় ।
সুইচের প্রয়োজনীয়তা
সুন্দর বিদ্যুতায়ন নির্ভর করে উৎপাদন, বিতরণ ব্যবস্থাপনা ও সঠিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উপর । আর সঠিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার একমাত্র নিয়ামক হলো সুইচ । বিদ্যুতের যথাযথ, সর্বোচ্চ ও নিরাপদ ব্যবহারের জন্য সুইচ অপরিহার্য । সুইচ বিদ্যুতের প্রবাহের দিক পরিবর্তন করতে পারে । এমনকি প্রবাহ পথের সংখ্যাও বাড়াতে পারে। সুইচ ব্যবহারের কারণে দূর্ঘটনা কমতে পারে। যথারীতি ও যথাযথ প্রয়োজনে সার্কিট কন্ট্রোল করা যায় । সুইচের সাহায্যে ইচ্ছে ও প্রয়োজন মাফিক বৈদ্যুতিক এ্যাপ্লায়েন্স ব্যবহার করা যায়। সুইচের আধুনীকিকরণের ফলেই কম্পিউটার ও রোবটের মতো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। সুইচের মাধ্যমে প্রয়োজনমতো বর্তনীকে অন-অফ করা যায় । ভোল্টেজ, কারেন্ট, এসি বা ডিসি এবং লোডের ধরন (রেজিস্টিভ, ইন্ডাকটভি, ক্যাপাসিটিভ) ইত্যাদির রেটিংও সুইচে করা থাকে। তাছাড়া দৈনন্দিন, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সর্বক্ষেত্রে বিদ্যুতের ব্যাপক ব্যবহার সুইচের কারণেই সম্ভব হচ্ছে। বিদ্যুতের সরবরাহ অন-অফ করার মাধ্যমে লোডকে নিয়ন্ত্রণ করে রক্ষনাবেক্ষণ, দুর্যোগের মুহূর্তে সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করা ইত্যাদি প্রয়োজনেই সুইচ ব্যবহার হয়।
নিয়ন্ত্রণের দিক থেকে সুইচ দুই প্রকার-
১. হস্তচালিত সুইচ (Manual Switch): যেমন- সিলেক্টর সুইচ
২. স্বয়ংক্রিয় সুইচ (Automatic Switch): যেমন- থার্মোস্ট্যাট সুইচ
ব্যবহারের দিক থেকে সুইচ প্রধানত দুই প্রকার-
১. নাইফ সুইচ (Knife Switch)
২. টাম্বলার সুইচ (Tumbler Switch)
হস্ত চালিত সুইচ তিন প্রকার-
১. টোগল সুইচ (Togol Switch)
২. পুশবাটন সুইচ (Push Button Switch)
৩. রোটারি সুইচ (Rotary Switch)
নাইফ সুইচ দুই প্রকার-
১. স্লো-ব্রেক নাইফ সুইচ (Slow Break Knife Switch)
২. কুইক-ব্রেক নাইফ সুইচ (Quick Break Knife Switch)
পোলের উপর ভিত্তি করে সুইচ তিন প্রকার-
১. সিঙ্গেল পোল সুইচ (Single Pole Switch)
২. ডাবল পোল সুইচ (Double Pole Switch)
৩. ট্রিপল পোল সুইচ ( Triple Pole Switch)
থ্রো এর উপর ভিত্তি করে সুইচ তিন প্রকার
১. সিঙ্গেল থ্রো সুইচ (Single Through Switch)
২. ডাবল থ্রো সুইচ (Double Through Switch)
৩. ট্রিপল থ্রো সুইচ (Triple Through Switch)
ওয়ে এর উপর ভিত্তি করে সুইচ তিন প্রকার-
১. ওয়ান ওয়ে সুইচ (One Way Switch)
২. টু ওয়ে সুইচ (Two Way Switch)
৩. ইন্টারমিডিয়েট সুইচ (Intermediate Switch)
ব্রেকের উপর ভিত্তি করে সুইচ দুই প্রকার-
১. সিঙ্গেল ব্রেক সুইচ (Single Break Switch)
২. ডাবল ব্রেক সুইচ (Double Break Switch)
কার্যনীতির উপর ভিত্তি করে টাম্বলার সুইচ চার প্রকার-
১. SPST (Single Pole Single Through) সুইচ
২. SPDT (Single Pole Double Through) সুইচ
৩. DPST (Double Pole Single Through) সুইচ
৪. DPDT (Double Pole Double Through) সুইচ
রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং-এ ব্যবহৃত সুইচের তালিকা-
মেইন সুইচ (Main Switch)
যে সুইচের সাহায্যে কোন বৈদ্যুতিক স্থাপনার সমগ্র সার্কিটকে এক সাথে নিয়ন্ত্রন করা যায়, তাকে মেইন সুইচ বলে। সাধারণত মেইন সুইচকে বাড়ির সিড়িঘরের নীচে অথবা গ্রাহকের নাগালের কাছাকাছি রাখা হয়, যেন সহজে বিপদের সময় মেইন সুইচকে অফ করা যায়। মেইন সুইচের ভোল্টেজের গ্রেড দুই রকম। নিম্ন চাপের জন্য ২৫০ ভোল্ট এবং মাঝারি চাপের জন্য ৫০০ ভোল্ট।
মেইন সুইচের শ্রেণীবিভাগ
১) I.C.D.P
২) IC.D.P.N
৩ ) I. C.T. P
8) I.C.T.P.N
মেইন সুইচের বিভিন্ন অংশ-
বহুবিধ কাজে অগণিত সুইচ ব্যবহার হয়। তার মধ্যে বেশি ব্যবহৃত সুইচের উল্লেখ করা হল-
টেস্ট করা বলতে কার্যক্ষমতা সঠিক আছে কিনা তা যাচাই করাকে বোঝানো হয়েছে। নিচে উল্লেখিত খাপ অনুসরণ করে আমরা বিভিন্ন প্রকার সুইচ টেস্ট করতে পরি।
ওয়ান ওরে সুইচ টেস্ট
১। অ্যাডোমিটারের সিলেক্টিং নবকে কন্টিনিউটি পজিশনে সেট করি;
২। সুইচটিকে অফ পজিশনে সেট করি এবং মিটার প্রোবষয়কে সুইচের দুই টার্মিনালে ধরি
৩। যদি কন্টিনিউটি না দেখায় তাহলে সুইচটি ভালো আছে। যদি কন্টিনিউটি দেখায় তবে বুঝতে হবে সুইচটি নষ্ট;
৪। এবার সুইচটিকে অন পজিশনে সেট করি এবং মিটার প্রোবষয়কে সুইচের দুই টার্মিনালে ধরি
৫। যদি কন্টিনিউটি দেখায় তাহলে সুইচটি ভালো আছে। যদি কন্টিনিউটি না দেখায় তবে বুঝতে হবে সুইচটি নষ্ট ।
শ্রেণি কক্ষের কাজ
একই পদ্ধতি অনুসরণ করে সুইচ, সকেট, প্লাগ, ফিউজ, হোল্ডার, তার, বাল্ব (২৫, ৪০, ৬০, ১০০ ওয়াট), রিলে, ক্যাপাসিটর, থার্মোস্ট্যাট, টাইমার, হিটার, থার্মালফিউজ, কুলিংওভার লোড, ওভার লোড প্রটেক্টর, ইত্যাদি পরীক্ষা করি ও ভালো মন্দ যাচাই করে নিচের তালিকাটি প্রস্তুত করি ।
এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা তার, ক্যাবল, ক্যাবলের বিভিন্ন প্রকার কোড, তারের কারেন্ট বহন ক্ষমতা (২.৪.৪-এ উল্লেখিত চার্ট) সম্পর্কে জানতে পারব ।
ইন্সুলেশন বিহীন অথবা বিশেষ ধরনের ইন্সুলেশন দিয়ে আচ্ছাদিত এক খেই অথবা বহু খেই বিশিষ্ট অল্প কারেন্ট বহনকারী পরিবাহীকে তার বলে ।
তারের প্রকারভেদ
তার সাধারণত দুই প্রকার-
রজ্জু তারের সুবিধা-
তারের সাইজ
ইলেকট্রিক্যাল কাজের জন্য তারের সাইজ নির্ধারন করতে হয়। অন্যথায় ইলেকট্রিক লোডের কাজের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তারের সাইজ গেজ (SWG) নাম্বারের সাহায্যে প্রকাশ করা হয়। যেমন ৩/২২, ৩/১৮, ১/১৮, ৭/১৮:, ৭/২২ ইত্যাদি। ৩/২২ এর অর্থ উক্ত তারের মধ্যে তিনটি খেই আছে যার প্রতিটি খেই ২২ গেজের। আবার তারের ডায়ামিটার ইঞ্চি অথবা মিলিমিটারের হতে পারে। যেমন ৩/২৯”, ৩/.৩৬” এবং ১/১.৪”, ১/১.৮” ইত্যাদি। ৩/০.২৯” বলতে বোঝায় উক্ত তারে তিনটি খেই এবং প্রতি খেই এর ডায়মিটার .২৯ ইঞ্চি । বর্তমানে ঘরবাড়ি এবং অফিস আদালতে ওয়্যারিং এর জন্য যে ক্যাবল ব্যবহার করা হয় তার সাইজ এভাবে লেখা হয়। যেমন ১.৫ mm2, ২.৫ mm2, ৪.০ mm2 ইত্যাদি।
তারের ব্যবহার
তার সাধারনত ট্রান্সমিশন এবং ডিষ্ট্রিবিউশন ওভারহেড লাইনে, আর্থিং, গাই, মোটর এবং ট্রান্সফরমারের কয়েলে এবং ইলেকট্রনিক্স এর বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
ইন্সুলেশন যুক্ত এক খেই বা বহু খেই বিশিষ্ট বেশি কারেন্ট বহনকারী পরিবাহীকে ক্যাবল বলে। সংক্ষেপে ইন্সুলেশন যুক্ত কন্ডাক্টরকে ক্যাবল বলে। এ জাতীয় ইন্সুলেশনের জন্য সাধারণত পি. ভি. সি প্লাস্টিক ইন্সুলেশন, পেপার ইন্সুলেশন, সুপার টাফ রাবার ইন্সুলেশন, ওয়েদার পুরুফ ইন্সুলেশন ব্যবহৃত হয়ে থাকে ৷
ক্যাবলের প্রকারভেদ
কোর অনুযায়ী ক্যাবল পাঁচ প্রকার-
ক্যাবলকে স্থাপন এবং গঠন অনুযায়ী দু'ভাগে ভাগ করা যায়-
আবরণের দিক থেকে ক্যাবলের প্রকারভেদ
ভোল্টেজের বিচারে ক্যাবল ৫ প্রকার-
ক্যাবলের সাইজ
মিলিমিটারের মান অনুযায়ী ক্যাবলের সাইজ-
ইঞ্চির মান অনুযায়ী ক্যাবলের সাইজ -
তার ও ক্যাবলের মধ্যকার পার্থক্য
BDS-Bangladesh Standard
BS - British Standard
ECC-Earth Continuty Conductor
Re - Conductor of Single Solid Wire of Circular Cross Section
Rm - Conductor of Multiple Stranded Wires of Circular Cross Section
Sm - Conductor of Multiple Stranded Wires of Sector Shaped Cross Section
ক্যাবলের কোড (Cable Codes )
এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা ইলেকট্রিক সার্কিট, খোলা সার্কিট, সিরিজ সার্কিট, প্যারালাল সার্কিট, মিশ্র সার্কিট, টেস্ট বোর্ড সম্পর্কে জানতে পারব।
যে পথের/যার মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে তাকে সার্কিট বা বর্তনী বলে । আবার বলতে পারি কারেন্ট চলাচলের সম্পূর্ণ পথকেই সার্কিট বা বর্তনী বলে । অর্থাৎ যে পথ দিয়ে সহজে বিদ্যুৎ চলাচল করে লোডের মধ্য দিয়ে কার্য সমাধান করে অন্য একটি পথ দিয়ে ফিরে আসতে পারে তাকে ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট বা বৈদ্যুতিক বর্তনী বলে ।
ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের প্রকারভেদ
ক) Open Circuit - খোলা বর্তনী
খ) Closed Circuit - আবদ্ধ বর্তনী
গ) Short Circuit - সংক্ষিপ্ত বর্তনী
সংযোগের উপর ভিত্তি করে ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে -
১। সিরিজ সার্কিট
২। প্যারালাল সার্কিট
৩। মিশ্র সার্কিট
ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের উপাদানগুলোর প্রয়োজনীয়তা
একটি ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের প্রধান উপাদান পাঁচটি-
১। বিদ্যুৎ এর উৎস (Source): যেমন- ব্যাটারী, জেনারেটর
২। পরিবাহী (Conductor): যেমন - তার বা ক্যাবল
৩। নিয়ন্ত্রন যন্ত্র (Controlling Device): যেমন – সুইচ
৪। ব্যবহার যন্ত্র (Load): যেমন- বাতি, পাখা, মোটর ইত্যাদি।
৫। রক্ষণ যন্ত্র (Protective Device): যেমন - ফিউজ, সার্কিট ব্রেকার।
এই পাঁচটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান ছাড়া কোন বর্তনীকে আদর্শ সার্কিট বলা যাবে না। কেননা ইলেকটিক্যাল সার্কিট হতে হলে অবশ্যই একটি বৈদ্যুতিক উৎস প্রয়োজন। একই ভাবে বৈদ্যুতিক উৎস হতে বিদ্যুৎ কে পরিবহন করার জন্য কন্ডাক্টর (Conductor)বা পরিবাহী প্রয়োজন। এরপর বিদ্যুৎ প্রবাহকে নিয়ন্ত্রন করার জন্য নিয়ন্ত্রনকারী যন্ত্রের প্রয়োজন। লোড ছাড়া কোন সার্কিট পরিপূর্ণ হয় না। সেজন্য বৈদ্যুতিক সার্কিটে লোড আবশ্যক। এরপর সম্পূর্ণ সার্কিটকে রক্ষা করার জন্য রক্ষণ যন্ত্রের প্রয়োজন। তাই একটি ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের মূল উপাদান পাঁচটি।
কোন উৎস হতে কারেন্ট প্রবাহ শুরু হয়ে যে কোন স্থানে বিচ্ছিন্ন অথবা খোলা থাকলে তাকে ওপেন সার্কিট বলা হয়। অর্থাৎ ওপেন সার্কিট অবস্থায় কারেন্ট প্রবাহ সম্পন্ন হতে পারে না। সার্কিট এর সুইচ অফ অবস্থায় কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে না, এমন সার্কিটকে ওপেন সার্কিট বা খোলা বর্তনী বলে। সুইচ অন অবস্থায় থাকলেও কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে না। কারণ সার্কিটের যে কোন স্থান খোলা বা কাটা থাকতে পারে।
আৰ ৰক্ষনী (Closed Circuit)
কোন উৎস থেকে কারেন্ট প্রবাহ শুরু হয়ে পুনরায় উষ্ণ উৎসে ফিরে আসলে তাকে বন্ধ সার্কিট বলে। অর্থাৎ এক প্রাপ্ত দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হয়ে অপর প্রান্ত দিয়ে ফিরে আসতে পারে এমন সার্কিটকে বোঝায় ।
সংক্ষিপ্ত বর্তনী (Short Clrcuit)
কোন সার্কিটের দুই ভার অর্থাৎ ফেজ তার ও নিউট্রাল তার অথবা ফেজ তার ও আর্থিং তার যদি একত্রিত হয়ে যায় তখন শর্ট-সার্কিট ঘটে। এর ফলে সার্কিট এবং লোডের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
যখন কতগুলো রেজিস্টর বা লোভ এমনভাবে সংযোগ করা হয় যাতে এদের একটির শেষ প্রান্ত অপরটির প্রথম প্রান্তের সাথে সংযোজিত হয় এবং বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগ করলে কারেন্ট প্রবাহের একটি মাত্র পথ থাকে তাকে সিরিজ সার্কিট বলে ।
সিরিজ সার্কিটের বৈশিষ্ট্য
• সিরিজ সার্কিটে কারেন্ট চলাচলের একটি মাত্র পথ থাকে
• সিরিজ সার্কিটের মোট রেজিস্ট্যান্স আলাদা আলাদা রেজিস্ট্যান্সের মানের যোগফলের সমান ।
অর্থাৎ, R = R1 + R2+ R3+ ..........+ Ra
• সিরিজ সার্কিটের প্রত্যেকটি রেজিস্ট্যান্সে কারেন্ট এর মান সমান থাকে অর্থাৎ, IT =I1=I2=I3=……..=Ia
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বেসিকস ফর আরসি
• সিরিজ সার্কিটের প্রত্যেকটি লোডে ভোল্টেজ ভাগ হয়ে যায়
অর্থ্যাৎ, V = V1 + Vat V3t. +Vn
• এই সার্কিটের যে কোন একটি বা একাধিক লোড নস্ট বা অকেজো হলে বাকী লোড কোন কাজ করবে না
• এই সার্কিটের সবগুলো লোডকে একটি মাত্র সুইচের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই সার্কিটে সাপ্লাই ভোল্টেজ লোডের মধ্যে ক্ষমতা অনুযায়ী ভাগ হয়ে যায় ফলে কোন লোড ফুল
ডোস্টেজ পায় না বিধায় ঠিক মত কাজ করে না
• এই সার্কিটের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক আলোকসজ্জা এবং ব্যাটারী চার্জ করা হয়
সিরিজ সার্কিটের ব্যবহার
• কম ভোল্টেজের সরগ্রাম বেশি ভোল্টেজে ব্যবহারের জন্য এই ধরণের সংযোগ ব্যবহার করা হয়
• কারেন্ট প্রবাহ নিয়ন্ত্রন করার কাজে ব্যবহার করা হয়
• বিভিন্ন প্রকার আলোক সজ্জার
• মোটর এবং জেনারেটরের কয়েলে এই ধরনের সংযোগ ব্যবহার করা হয়
যখন কতকগুলো রেজিস্টরকে এমনভাবে সংযোগ করা হয় যাতে এদের একপ্রান্তগুলো একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে এবং অপর প্রান্তগুলো আর একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে সংযোগ করা হয়, তখন তাকে প্যারালাল সার্কিট বলে।
প্যারালাল সার্কিটের বৈশিষ্ট্য
প্যারালাল সার্কিটে কারেন্ট চলাচলের একাধিক পথ থাকতে পারে। প্যারালাল সার্কিটের মোট রেজিস্ট্যান্সের উল্টানো মান প্রত্যেকটি ভিন্ন ভিন্ন রেজিস্ট্যান্সের উল্টানো মানের যোগফলের সমান। অর্থাৎ,
• প্যারালাল সার্কিটের প্রত্যেকটি লোডে কারেন্ট ভাগ হয়ে যায়। অর্থাৎ,
I = 1 + 2 + 3 + ...........…+ In
• প্যারালাল সার্কিটের প্রত্যেকটি লোডে ভোল্টেজ সমান থাকে । অর্থাৎ,
VT = V1 = V2= V3 = ....... = Vn
• এই সার্কিটে প্রত্যেকটি লোডে ভোল্টেজ সমান থাকে । তাই সবগুলো লোড পূর্ন শক্তিতে কাজ করে এই সার্কিটের যে কোন
• একটি বা একাধিক লোড নষ্ট বা অকেজো হয়ে গেলেও বাকী লোডগুলো ঠিকমত কাজ করবে
• এই সার্কিটের প্রত্যেকটি লোডকে আলাদা আলাদা নিয়ন্ত্রণ করা যায়
• এই সার্কিটের মাধ্যমে সকল ধরনের ওয়্যারিং এর কাজ করা হয়
উদাহরন - ১
22, 4 এবং 62 রেজিস্ট্যান্স বিশিষ্ট একটি প্যারালাল সার্কিটের মোট রেজিষ্ট্যান্স বের কর ।
প্যারালাল সার্কিটের ব্যবহার
• যে সার্কিটে ভোল্টেজ সমান কিন্তু কারেন্ট কম প্রয়োজন সে ক্ষেত্রে প্যারালাল সংযোগ ব্যবহার করা হয়
• বাসগৃহ ও কলকারখানার যাবতীয় সরঞ্জাম প্যারালালে সংযোগ করা হয়
কোন সার্কিটে যখন কিছু লোড সিরিজে ও কিছু লোড প্যারালালে সংযোগ করা হয় তখন তাকে সিরিজ ও প্যারালাল / মিশ্র সার্কিট বলে। এইরূপ কোন সংযোগে যদি কোন সার্কিট ব্যবহার করা হয় তাহলে তাকে সিরিজ- প্যারালাল সার্কিট বা মিশ্র সার্কিট বলে।
টেষ্ট বোর্ড এমন একটি টেটিং ব্যবস্থা যার সাহায্যে আমরা ইলেকট্রিক্যাল বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট এবং ওয়্যারিং এর দোষ ত্রুটি সহজে শনাক্ত করতে পারি। গঠন সহজ এবং কম খরচে এটি তৈরি করা সম্ভব বলে টেস্টিং ব্যবস্থার এটি বহুল ব্যবহৃত হয়।
টেস্ট বোর্ড তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মালামাল
•কাঠের বোর্ড
• ফিউজ বা কাট-আউট
• সুইচ
• সকেট
• বাতি
• প্রয়োজনীয় কন্ডাক্টর
• হোল্ডার
টেস্ট বোর্ডের দক্ষতা যাচাই
তৈরীকৃত বর্তনীর হোল্ডারে একটি বাঘ সংযোগ করে সাপ্লাই দেয়ার পর সকেটে একটি বাতি লাগাতে হবে। তারপর সিরিজ সুইচ অন করলে সকেটের এবং টেষ্ট বোর্ডের বাতিটি সিরিজে সংযুক্ত হবে ফলে দু'টি বাতিই অনুজ্জ্বল হয়ে জ্বলবে। তবে প্যারালাল সুইচ অন করলে সকেটের বাতি উজ্জ্বল ভাবে স্কুলবে এবং সিরিজ বাতি বন্ধ হয়ে যাবে। যদি তাই হয় তবে বুঝতে হবে সিরিজ বোর্ড তৈরি সঠিক হয়েছে।
এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা ওয়্যারিং, চ্যানেল ওয়্যারিং করার পদ্ধতি, বিভিন্ন টেস্ট পদ্ধতি, কম্প্রেসরের টার্মিনাল নির্ণয়, মোটরের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে তালিকা প্রস্তুত করতে পারব।
বাসগৃহে ব্যবহৃত লোড (লাইট, ফ্যান, হিটার, মোটর, রেফ্রিজারেটর, এয়ার-কন্ডিশনার ইত্যাদি) সমূহকে পরিচালনার জন্য সুবিন্যস্ত তার ব্যবস্থাপনাকে ওয়্যারিং বলে।
ওয়্যারিং-এর আবশ্যকতা
পরিকল্পিত House Wiring ব্যতীত নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে বিদ্যুৎ শক্তিকে প্রয়োজনমতো ব্যবহার করা যায় না। বাসগৃহ, অফিস, কারখানা, প্রতিষ্ঠান, দোকান, ওয়ার্কশপ প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিতরণ ও ব্যবহারের জন্য House Wiring এর আবশ্যকতা অসীম । কারণ সুন্দর, সুষ্ঠু, পরিকল্পিত, নিয়মতান্ত্রিক নিরাপদ বিদ্যুৎ ব্যবস্থার জন্য House Wiring -এর বিকল্প নেই । অনুমোদিতভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তি এবং নিচে বর্ণিত সুযোগ-সুবিধাদির লক্ষ্যে বাসগৃহ ওয়্যারিং-এর আবশ্যকতা পরিলক্ষিত হয় ।
১। নিরাপত্তা সুবিধা: সুন্দর, সুষ্ঠু, পরিকল্পিত, নিয়মতান্ত্রিক ওয়্যারিং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
২। নিয়ন্ত্রণ সুবিধা: সুইচ যার মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রবাহ চালু ও বন্ধ করা যায় ।
৩। সৌন্দর্য সুবিধাঃ Wiring বাসগৃহে বা ইমারতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। ৪। স্থায়িত্ব বৃদ্ধি সুবিধা: সুষ্ঠু ও পরিকল্পিত তার বিন্যাস ব্যবস্থায় দীর্ঘ দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায় ।
৫। অর্থ সাশ্রয়ের সুবিধা: সুন্দর ও পরিকল্পিত তার বিন্যাসে সরঞ্জামাদির বিদ্যুৎ খরচ কম হয়।
৬। রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধা: সঠিক ওয়্যারিং-এ সরঞ্জামাদির রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধা বেশি পাওয়া যায়।
৭। বণ্টনের সুবিধাঃ পরিকল্পিত Wiring এর মাধ্যমে সুন্দর, সুষ্ঠু বিতরণ নিশ্চিত করা যায় ইত্যাদি ।
ওয়্যারিং সাধারণত দুই প্রকার-
• অভ্যন্তরীণ ওয়্যারিং (Internal Wiring) • বাহ্যিক ওয়্যারিং (External Wiring)
অভ্যন্তরীণ ওয়্যারিং (Internal Wiring): আবাসিক বা অফিস ঘরে, কল কারখানায় ও প্রতিটি বিল্ডিং এর ভেতরে যে ওয়্যারিং ব্যবহার করা হয় তাকে অভ্যন্তরীণ ওয়্যারিং বলে যাকে সাধারণত ৫ ভাগে ভাগ করা যায়-
• ক্লীট ওয়্যারিং (Cleat Wiring) • চ্যানেল ওয়ারিং (Channel Wiring)
• ব্যাটেন ওয়্যারিং (Batten Wiring) • ট্রাংকিং ওয়্যারিং (Trenching Wiring)
• কন্ডুইট ওয়্যারিং (Conduit Wiring) • কেসিং ও ক্যাপিং ওয়্যারিং (Casing & Capping Wiring)
বাহ্যিক ওয়্যারিং-কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়-
• ওভার হেড ওয়্যারিং (Over Head Wiring) • আন্ডার গ্রাউন্ড ওয়্যারিং (Under Ground Wiring)
ওয়্যারিং করার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি
• ইলেকট্রিশিয়ান চাকু (Electrician Knife ) • রাওয়াল প্লাগ ছেনি (Rowel Plug Chisel)
• কম্বিনেশন প্লায়ার্স (Combination Pliers ) • প্লাম্ব বব (Plumb Bob )
• লং নোজ প্লায়ার্স (Long Nose Pliers) • নিয়ন টেষ্টার (Neon Tester)
• ফ্ল্যাট স্ক্রু-ড্রাইভার (Flat Screw Driver) • ওয়্যার গেজ (Wire Gauge )
• পোকার (Poker ) • স্টার/ফিলিপ্স স্ক্রু-ড্রাইভার
• বলপিন/ক্রসপিন হ্যামার • ওয়্যার স্ট্রিপার (Wire Stripper)
(Star/Philips Screw Driver) (Ball pin/Cross pin Hammer)
• ওয়্যার পাঞ্চ মেশিন (Wire Punch Machine) • হ্যান্ডড্রিল মেশিন (Hand Drill Machine)
• অ্যাডজাস্টেবল রেঞ্জ (Adjustable Wrench) • মেজারিং টেপ (Measuring Tape)
• হ্যাকস (Hack - Saw)• ডাইয়াগোনাল কাটিং প্লায়ার্স
• কানেকটিং স্ক্রু-ড্রাইভার
(Diagonal Cutting Pliers) (Connecting Screw Driver)
ওয়্যারিং এর নিয়ম কানুন
• বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী ও সাপ্লাই লাইনের মধ্যে মেইন সুইচ সংযোগ করতে হবে, যাতে বিপদ মূহুর্তে মেইন সুইচ বন্ধ করলেই • ওয়্যারিং কিংবা সরঞ্জাম সমূহকে রক্ষা করা যায়।
• এমন সাইজের তার বা ক্যাবল ব্যবহার করতে হবে, যাতে ফুল লোড কারেন্ট বহন করতে পারে
• সুইচ বোর্ডের উচ্চতা ১.৩ মিটার (৪'-৩”) হতে ১.৫ মিটার (৪'-৫”) এর মধ্যে হতে হবে ৩-Pin Socket এর জন্য অবশ্যই পৃথক • সুইচ লাগাতে হবে এবং আর্থিং তারও সংযোগ করতে হবে
• মেঝে হতে বাতির উচ্চতা ২.৫ মিটার (৮') উপরে লাগাতে হবে
• মেঝে হতে সিলিং ফ্যানের উচ্চতা ২.৭৫ মিটার (৯) উপরে হবে
• বৈদ্যুতিকশক হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য সকল মেটালিক বড়ি, কভার, মেইন সুইচ এবং বৈদ্যুতিক এ্যাপ্লায়েন্স অবশ্যই আর্থিং করতে হবে
• সার্কিটে অবশ্যই রক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে। যেমন- ফিউজ, সার্কিট ব্রেকার ইত্যাদি
• কোন স্থানে লাইটিং ও পাওয়ার সার্কিট পৃথক করে ওয়্যারিং করতে হবে
• ওয়্যারিং শেষে সকল প্রকার টেষ্ট সম্পন্ন করে লোডে সাপ্লাই দিতে হবে
ওয়্যারিং এর সময় তারের সাইজ এবং তারের পরিমানের উপর ভিত্তি করে চ্যানেলের সাইজ নির্বাচন করা হয় । যেখানে যত বেশী পরিমান তার টানা হবে সেখানে তত বেশী বড় আকারের চ্যানেল ব্যবহার করতে হবে। এই চ্যানেলের দু'টি অংশ থাকে- একটি বেস (Base) বা তলা অপরটি কভার (Cover) বা ঢাকনা। ওয়্যারিং এর সময় বেসটি দেয়ালের উপর রাওয়াল প্লাগ এবং স্ক্রু দিয়ে ভালোভাবে আটকাতে হবে। তারপর বেস এর গর্ত বা চ্যানেল এর মধ্য দিয়ে তার টেনে ওয়্যারিং সম্পন্ন করা হয়। তার টানা শেষ হলে বেসের উপর কভার লাগিয়ে দেয়া হয় । কভার থাকার জন্য এই ওয়্যারিং এর তার দেখা যায় না । কভার লাগানোর পর তার সংযোগ স্থল আঠা বা পুটিং দিয়ে আটকিয়ে দিতে হবে, যাতে পোকা-মাকড় ঢুকতে না পারে।
চ্যানেল ওয়্যারিং এর সুবিধা
• অন্যান্য ওয়্যারিং এর চেয়ে এই ওয়্যারিং খুবই সহজ
• স্বল্প খরচে সম্পন্ন করা যায়
• রক্ষণাবেক্ষণ সহজ
• শুধুমাত্র কভার খুলেই তার বা ক্যাবল বের করা সম্ভব
চ্যানেল ওয়্যারিং এর অসুবিধা
• দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে চ্যানেলের কভার খুলে যেতে পারে
• মোটা ক্যাবল চ্যানেলের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করানো যায় না।
• বহুতল ভবনে চ্যানেল ওয়্যারিং ব্যবহার করা যায় না
ব্যবহার
বর্তমানে বাসাবাড়ী, অফিস-আদালতসহ প্রায় জায়গাতেই চ্যানেল ওয়্যারিং ব্যবহার করা হয়, কারণ এটি সহজলভ্য।
১) কন্টিনিউটি টেস্ট পদ্ধতি
কোন ওয়্যারিং এর কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর, সেই ওয়্যারিং এ তারের ভিন্ন ভিন্ন টুকরার মধ্যে বৈদ্যুতিক সংযোগ আছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য যে টেস্ট করা হয় তাকে কন্টিনিউটি টেস্ট বা নিরবিচ্ছিন্ন পরীক্ষা বলা হয়। বৈদ্যুতিক ঘন্টা এবং ইন্সুলেশন টেস্টিং মেগারের সাহায্যে এই টেস্ট করা যায়। এই টেস্ট মেগার এবং টেস্ট ল্যাম্পের সাহায্যে করা যায়।
ইন্সুলেশন টেস্টিং মেগারের সাহায্যে কন্টিনিউটি টেস্ট
এই কন্টিনিউটি টেস্ট বাড়ীর মেইন সুইচের টার্মিনালেই বেশীর ভাগ করা হয়ে থাকে। প্রথমে মেইন সুইচ অফ করে কাট আউটগুলি খুলে নিতে হবে। তারপর মেগারের দু'টি টার্মিনাল ওয়্যারিং এর দু'টি টার্মিনালের সাথে যুক্ত করতে হবে। এবার যে সার্কিট পরীক্ষা করতে হবে সেই সার্কিটের পয়েন্টে বা পয়েন্টগুলোতে লোড লাগিয়ে ঐ সার্কিটের সব সুইচ অফ করতে হবে। এবার মেগারের হাতল নির্দিষ্ট গতিবেগে ঘুরাতে হবে এবং একটি একটি সুইচ অন করতে হবে। সুইচ অন করার পর যদি মেগারের কাটা শুন্য (০) নির্দেশ করে, তবে বুঝতে হবে কন্টিনিউটি ভাল আছে। আর যদি সার্কিটের তার কোথাও খোলা বা কাটা থাকে তাহলে মেগারের কাটা ইনফিনিটি বা কোন উচ্চ মানের রেজিষ্ট্যান্স নির্দেশ করবে যা কোন রিডিং দেবে না।
তবে টেষ্টের জন্য প্রয়োজনীয় সংযোগ সম্পন্ন করার পর টেষ্ট করার আগে সমস্ত লোডগুলিকে খুলে রেখে সমস্ত সুইচ অন করে মেগারের হাতল ঘুরালে যদি মেগার জন্য পাঠ দেখায় তাহলে বুঝতে হবে সার্কিটের কোথাও শর্ট আছে।
2) Open Circuit Test
যদি কোন বর্তনীর মধ্যে কন্টিনিউটি না পাওয়া যায় তাহলে বুঝতে হবে বর্তনীর কোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এই ধরণের অবস্থাকে Open সার্কিট বলা হয়। ওপেন সার্কিট টেষ্ট কন্টিনিউটি টেষ্টের মতই এক্ষেত্রে মেগারের কাঁটা অসীম দেখালে বুঝতে হবে সার্কিটের কোথাও ওপেন আছে।
Open Circuit এর কারণ
● ক্যাবলের ভেতর কন্টাক্টরের সংযোগ না থাকা
• হোন্ডার অথবা সুইচের তার বিচ্ছিন্ন থাকা
• ক্যাবলের সংযোগ ভুল থাকা
Open Circuit এর প্রতিকার
• মেগারের সাহায্যে কন্টিনিউটি পরীক্ষা করতে হবে
• সুইচের পোলারিটি ঠিক আছে কিনা তা দেখতে হবে
• ক্যাবলের সংযোগ ঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে
৩) পোলারিটি টেস্ট
ফেজ তারের সাথে সুইচ সংযোগ দেয়া হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য পোলারিটি টেস্ট করা হয়। পোলারিটি টেস্ট করার জন্য সাধারনত টেস্ট ল্যাম্প পদ্ধতিই বেশি ব্যবহার করা হয়। এই টেস্ট বিভিন্ন ভাবে করা যায় ।
সুইচ অন করে টেস্ট করা
এই টেস্ট একটি টেস্ট ল্যাম্পের সাহায্যে করা যায়। টেস্ট ল্যাম্পের টার্মিনাল দু'টির যে কোন একটি সুইচের এক পোলে সংযোগ করতে হবে এবং অপর প্রান্তটি আর্থিং এর সঙ্গে ভালভাবে সংযোগ করতে হবে। সংযোগ শেষ হওয়ার পর সুইচটি অন (On) করলে টেস্ট ৰাতি পুরো ফুলৰে। এতে বোঝা যাবে পোলারিটি ভাল আছে। কিন্তু যদি সুইচ টিউট্রাল লাইনে লাগানো থাকে ভাতে টেস্ট ৰাতি একেবারেই জ্বলবে না। এতে বোঝা যাবে পোলারিটি ঠিক নেই। সুইচ অফ (Off) করেও পোলারিটি টেস্ট করা যায়। তবে সুইচ অন (On) করে টেস্ট করাই নির্ভুল হবে। যত ভোল্টের সার্কিট হবে টেস্ট ৰাতিও ঠিক তত ভোটের হতে হবে।
৪) ইন্সুলেশন রেজিষ্ট্যান্স টেস্ট
গুয়ারিং এর ইন্সুলেশন রেজিস্টান্স টেস্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ ইন্সুলেশন রেজিস্ট্যান্স এর উপর ওয়্যারিং এর নিরাপত্তা এবং স্থায়িত্ব নির্ভর করে থাকে। এই জন্য কোন সার্কিটের ইন্সুলেশন রেজিস্ট্যান্স জানা খুবই প্রয়োজন। ইন্সুলেশন টেস্টিং মেগারের সাহায্যে এই টেস্ট করা হয়।
টেস্ট করার পদ্ধতি
প্রথমে মেইন সুইচ বন্ধ করে (OH) বা কাট আউট খুলে নিতে হবে এবং সমস্ত লোডগুলি (বাতি, পাখা ইত্যাদি) খুলে রাখতে হবে। সমস্ত সুইচ অন (On) অবস্থায় রাখতে হবে। এইবার মেগারের L ও E প্রান্তের দু'টি তার বর্ষাক্রমে ফেজ তার ও নিউট্রাল তারের সংগে সংযোগ করতে হবে। এবার যেগারের হাতলটি প্রয়োজনীয় গতিতে ঘুরায়ে যন্ত্রের কাটা স্কেলের উপর যে জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবে অর্থাৎ, যে রিডিং দেখাবে তাই হবে ওয়্যারিং এর দুই তারের মধ্যে ইন্সুলেশন রেজিস্ট্যান্স। নিয়ম হচ্ছে ইন্সুলেশন রেজিস্ট্যান্স কোন সার্কিটের বা কোন বাড়ির মোট পয়েন্টের সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে যত হবে তত মেগা ওহম হওয়া চাই। অর্থাৎ দুই তারের মধ্যে ইন্সুলেশন রেজিস্ট্যান্স হবে ৫০/২০ = ২.৫ মেগা ওহম। এখানে মোট পয়েন্টের সংখ্যা ২০ ধরা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে কোন বাড়ির সমগ্র বৈদ্যুতিক স্থাপনের ইন্সুলেশন রেজিস্ট্যান্স “১” মেগাওহমের বেশী না হলেও চলবে। যদি ১ মেগাওহমের কম দেখায় তাহলে বুঝতে হবে ওয়্যারিং এ কোথাও লিকেজ আছে। আর যদি রিডিং শুন্য দেখায় তাহলে বুঝতে হবে ওয়্যারিং এ কোথাও শর্ট আছে।
কম্প্রেসর মোটর টার্মিনালের তিনটা লাইন আছে-
১. কমন ২. রানিং ও ৩. স্টার্টিং
ফ্রিজ বা এসিতে যেসব কম্প্রেসর ব্যবহার করা হয় এখনো সিড করা থাকে। তাই চোখ দিয়ে দেখে বোঝার উপার নেই যে কোনটা কমন, রানিং আর স্ট্যার্টিং। এ্যান্সে মিটার বা টেস্ট ল্যাম্প ব্যবহার করে এগুলো বের করতে পারি।
আমরা এ্যাডোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করতে নিচের ধাপ অনুসরণ করি- ১. অ্যাডোমিটারের সিলেক্টর সুইচ ওহম স্কেলে X১০ এ রাখি;
২. তিনটা পিনে অ্যাডোমিটারের পিড ধরে দেখতে হবে কোনটার রেজিস্ট্যান্স কত? যে দু'টির রেজিস্ট্যান্স বেশি হবে তার বিপরীতটাই হবে কমন । কমন থেকে যে পিনের রেজিস্ট্যান্স কম হবে সেটি হবে রানিং । কমন থেকে যেটির রেজিস্ট্যান্স বেশি হবে সেটি হবে স্ট্যাটিং।
উদাহরণটি লক্ষ্যকরি
মনে করি মোটর টার্মিনালের তিনটি লাইনের প্রথমটি C দ্বিতীয়টি S এবং তৃতীয়টি R. এ্যাভোমিটারের প্রোবায় CS-এ ধরে এর রেজিস্ট্যান্স পেলাম ও ওহম। একইভাবে CR-এ ধরে ২ হম এবং S R - ধরে পেলাম। তাহলে কোন টার্মিনালের রেজিস্ট্যান্স বেশি ? S ও R-এ ধরে সবচেয়ে বেশি রেজিস্ট্যান্স পেয়েছি। তাহলে S ও R এর বিপরীত প্রাস্ত C হবে কমন । কমন C এর সাথে S এর রেজিস্ট্যান্স দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ ও তাহলে S স্ট্যার্টিং এবং কমন C এর সাথে R এর রেজিস্ট্যান্স সবচেয়ে কম ২ ওহম তাহলে R রানিং।
কন্টিনিউটি টেস্ট: এ্যাভোমিটারের একটি প্রোবকে মোটরের স্টার্টিং ও অপর প্রোবকে রানিং কয়েলের সাথে ধরি। যদি রেজিস্ট্যান্স দেখায় তাহলে বুঝতে হবে কয়েল ঠিক আছে। যদি রেজিস্ট্যান্স না দেখায় তবে বুঝতে হবে কয়েল কোথাও ওপেন হয়ে আছে।
মোটরের বডি আর্থিং টেস্ট: এ্যাভোমিটারের একটি প্রোব মোটরের বডির সাথে ধরি। অপর প্রোবটি একে একে
কমন, স্টাটিং ও রানিং এর টার্মিনালের সাথে ধরি। যদি কন্টিনিউটি দেখায় তবে বুঝতে হবে বডি শর্ট আছে । কন্টিনিউটি না দেখালে বুঝতে হবে মোটর ভালো আছে। কয়েল টু কয়েল টেস্ট: এ্যাভোমিটারের প্রোবদ্বয়কে যথাক্রমে মোটরের স্টাটিং কয়েলের দুই প্রান্তে ও রানিং কয়েলের দুই প্রান্তে ধরি। যদি রেজিস্ট্যান্স দেখায় তাহলে বুঝতে হবে কয়েল ঠিক আছে। আর যদি রেজিস্ট্যান্স
না দেখায় তাহলে বুঝতে হবে কয়েল শর্ট আছে।
শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ
২.৬.৫ অনুযায়ী ট্রেডের ওয়ার্কশপে রক্ষিত একাধিক কম্প্রেসর ও সিঙ্গেল ফেজ মোটর নিয়ে তার কার্যকারিতা পরীক্ষা করে নিচের ছকটি টিক/ক্রস চিহ্ন দিয়ে পূরণ করি-
টেস্টের ফলাফল-
ক্রমিক নং | ধরণ | বডি শর্ট | কয়েল কাটা | মন্তব্য |
---|---|---|---|---|
১ | সিঙ্গেল ফেজ মোটর | |||
২ | কম্প্রেসর |
এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা ইলেকট্রনিক্স কাজে ব্যবহৃত কম্পোনেন্ট টেস্ট করা এবং একটি কাজ
সম্পাদনের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্ট গুলোর তালিকা প্রস্তুত করতে পারব।
ইলেকট্রন শব্দটি থেকে ইলেকট্রনিক্স কথাটির উৎপত্তি হয়েছে। সব পদার্থের মাঝেই ইলেকট্রন থাকে। আর এই ইলেকট্রন সংক্রান্ত বিজ্ঞানকে বলা হয় ইলেকট্রনিক্স। বিজ্ঞানের যে শাখায় ইলেকট্রনের প্রবাহকে বিভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রনের কৌশল শেখানো হয় বা তার প্রবাহকে নিয়ে গবেষনা করা হয়, সেই শাখাকেই বলা হয় ইলেকট্রনিক্স ।
RAC Trade - এ ইলেকট্রনিক্স এর গুরুত্ব
বর্তমানে প্রায় সকল রেফ্রিজারেটর এবং এয়ার কন্ডিশনার নিয়ন্ত্রণ করা হয় রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে বা ইলেকট্রনিক্স সার্কিট এর মাধ্যমে। তাই আর এসি টেকনিশিয়ানদের রেফ্রিজারেটর এবং এয়ার কন্ডিশনার সঠিক ভাবে নৈপুণ্যতার সাথে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষন করার জন্য অবশ্যই বেসিক ইলেকট্রনিক্স সম্পর্কে জানা প্রয়োজন ।
কিছু ইলেকট্রনিক্স পণ্য ( Some of Electronics Goods)
TV, Radio, RCR, VCD, DVD, Computer, Telephone, Fax Mobile Phone ইত্যাদি।
রেজিস্টর (Resistor)
রেজিস্টর ইলেকট্রনিক্স কাজে ব্যবহৃত একটি কম্পোনেন্ট যা সার্কিটে তড়িৎ প্রবাহে বাধা দেয়। কোন সার্কিটে একটি নির্দিষ্ট পরিমান ভোল্টেজ পাওয়ার জন্য সাপ্লাই ভোল্টেজের পথে ড্রপ ঘটানোর জন্য রেজিস্টর ব্যবহার করা হয়। রেজিস্টরকে R দিয়ে প্রকাশ করা হয় ।
রেজিস্ট্যান্সের বাংলা অর্থ হচ্ছে রোধ বা বাধা। বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রে রোধ বলতে আমরা ইলেকট্রন প্রবাহের পথে বাধাকে বুঝি । সুতরাং বলা যায় পরিবাহীর যে ধর্মের জন্য তার মধ্য দিয়ে ইলেকট্রন প্রবাহে বাধাপ্রাপ্ত হয় তাকে ঐ পদার্থের রেজিস্ট্যান্স বলে। সব পদার্থের মধ্যে কিছু না কিছু রেজিস্ট্যান্স থাকে। যে পদার্থের রেজিস্ট্যান্স যত বেশি সেই পদার্থের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রনের প্রবাহ তত কম। রেজিস্ট্যান্সের একক ওহম। এর প্রতীক ।
রেজিস্টরের প্রকারভেদ: রেজিস্টর প্রধানত দুই প্রকার-
• অপরিবর্তনশীল রেজিস্টর (Fixed Resistor) • পরিবর্তনশীল রেজিষ্টর (Variable Resistor) অপরিবর্তনশীল রেজিস্টর ( Fixed Resistor): যে রেজিস্টরের মান পরিবর্তনশীল নয় তাকে অপরিবর্তনশীল বা ফিক্সড রেজিস্টর বলে। গঠন প্রনালীর ভিন্নতা অনুসারে বিভিন্ন ধরনের রেজিস্টর পাওয়া যায়। যেমন-
• কার্বন ফিল্ম রেজিস্টর
• মেটাল ফিল্ম রেজিস্টর
কার্বন কম্পোজিশন রেজিস্টর: ১ ওহম থেকে ২০ মেগাওহম এবং ১/৮ ওয়াট থেকে ২ ওয়াট পর্যন্ত পাওয়া যায়।
• ওয়্যার উন্ড রেজিস্টর: এই ধরনের রেজিস্টর সাধারনত ১ওহম থেকে ১০০ কিলোওহম পর্যন্ত এবং ৫ ওয়াট থেকে ২০০ ওয়াট পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ব্যবহার: ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশে ভোল্টেজ ড্রপ এবং কারেন্ট কমানোর জন্য অপরিবর্তনশীল রেজিস্টর ব্যবহার করা হয়।
পরিবর্তনশীল রেজিষ্টর (Variable Resistor): যে রেজিষ্টরের মান পরিবর্তনশীল বা মানের পরিবর্তন করা যায় তাকে পরিবর্তনশীল বা ভ্যারিয়েবল রেজিস্টর বলে।
শ্রেণীবিভাগ: রেজিস্ট্যন্সের মানের পরিবর্তনের হার অনুযায়ী এই ধরনের রেজিস্টরকে দুই ভাগে ভাগ করা
যায়-
• লগ্ টাইপ • লিন টাইপ ৷
ব্যবহার: রেডিও, টেলিভিশন, টেপ রেকর্ডারের ভলিয়ম কন্ট্রোলে এই ধরনের রেজিস্টর ব্যবহার করা হয় ।
কালার কোডের সাহায্যে রেজিস্টরের মান বের করার ছক
বি: দ্র: রেজিস্টরের প্রথম ডিজিটে কখনও কালো, সোনালী, রুপালী ও রংহীন হয় না। রেজিস্টরে যে অংশে ঘন রং আছে সেই অংশ থেকে গণনা শুরু করতে হবে।
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বেসিকস র আরএ
রেজিস্টর পরীক্ষা
ওহস মিটার দিয়ে রেজিস্টর পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা করার আগে রেজিস্টরের মান কালার কোডের সাহায্যে বের করে নিতে হবে। তারপর যে মানের রেজিস্টর পরীক্ষা করতে হবে তার চেয়ে বেশি রেছে সিলেক্টর সুইচ সিলেক্ট করতে হবে। এরপর মিটারের দুইটি প্রোব রেজিস্টরের দুই প্রান্তে ধরে মিটারের ডায়াল থেকে মাল বের করতে হবে। এই মান যদি রেজিস্টরের নির্দিষ্ট মানের থেকে কম বা বেশি হয় তাহলে রেজিস্টরটি নষ্ট হিসাবে গন্য করা হয়। উল্লেখ্য, এখানে রেজিস্ট্যান্সের টলারেন্স বিবেচনা করতে হবে।
দু'টি পরিবাহী পাতকে যদি একটি অপরিবাহী মাধ্যমে পৃথক বা আলাদা করা হয় এবং ব্যবস্থাটি যদি বিদ্যুৎ শক্তি ধরে রাখতে পারে তবে সেই ব্যবস্থাকে ক্যাপাসিটর বলে। অর্থাৎ ক্যাপাসিটর এমন একটি ডিভাইস যার সাহায্যে ইলেকট্রিক্যাল শক্তিকে ধারণ করে রাখা যায়। ক্যাপাসিটরের একক ফ্যারাড । একে F যারা প্রকাশ করা হয়। ক্যাপাসিটর বিদ্যুৎ সঞ্চয় করে রাখতে পারে। ক্যাপাসিটরের এই চার্জ ধরে রাখার ক্ষমতাকে ক্যাপাসিটরের ক্যাপাসিট্যান্স বলে। কোন ক্যাপাসিটরের ক্যাপাসিট্যান্স এক ফ্যারাড তখনি বলা হবে যখন ক্যাপাসিটরের প্লেট দু'টো এক চার্জ কুলম্ব সঞ্চয় করলে যদি প্লেট দু'টির বিভব পার্থক্য এক ভোল্ট হয়
ক্যাপাসিটরের কাজ (ভি সি সরবরাহের ক্ষেত্রে)
যখন ক্যাপাসিটরের মধ্যে ডি সি সাপ্লাই দেয়া হয়, তখন ডি. সি সাপ্লাই এর পজেটিভ আয়ন কাপাসিটরের পজেটিভ প্লেটে জমা হয় এবং নেগেটিভ আরন ক্যাপাসিটরের নেগেটিভ প্লেটে জমা হয়। উক্ত প্রক্রিয়ার পজেটিভ এবং নেগেটিভ আয়ন দিয়ে ক্যাসিটরের প্লেট দু'টি চার্জ পূর্ণ হলে সরবরাহ থেকে আর চার্জ গ্রহণ করে না। সেই সময় ব্যাটারী থেকে আর কারেন্ট প্রবাহিত হয় না। এমতাবস্থার ক্যাপাসিটর চার্জ পূর্ণ হয়েছে বলে ধরা হয়। এখন ক্যাপাসিটরের টার্মিনালে কোন লোড সংযোগ করলে ক্যাপাসিটর লোডে কারেন্ট প্রবাহিত করে ডিসচার্জ হয়। এই ভাবে ক্যাপাসিটর ডি. সি সরবরাহে কাজ করে।
ক্যাপাসিটরের কাজ (এ. সি সরবরাহের ক্ষেত্রে)
যখন ক্যাপাসিটরে এ. সি সাপ্লাই দেয়া হয়, তখন ক্যাপাসিটরের পজেটিভ প্লেট পজেটিভ হাফ সাইকেল দিয়ে চার্জ হয়। আবার পরক্ষণে নেগেটিভ হাফ সাইকেল দিয়ে ক্যাপাসিটরের নেগেটিভ প্লেট চার্জ যুক্ত হয়। পরবর্তী সাইকেলে পজেটিভ প্লেটে নেগেটিভ ইলেকট্রন এবং নেগেটিভ প্লেটে পজেটিভ ইলেকট্রন প্রবাহিত হলে ক্যাপাসিটর ডিসচার্জ হতে থাকে। ক্যাপাসিটরে এসি সাপ্লাই সরবরাহ করলে এই ভাবে অনবরত চার্জ এবং ডিসচার্জ হতে থাকে।
ক্যাপাসিটরের প্রকারে
ক্যাপসিটর সাধারণত দুই প্রকার-
• ফিক্সড ক্যাপাসিটর (Fixed Capacitor) • ভেরিয়েবল ক্যাপাসিটর (Variable Capacitor)
ফিক্সড ক্যাপাসিটর কে আবার হয় ভাগে ভাগ করা যায়-
• পেপার ক্যাপাসিটর (Paper Capacitor) • পলিয়েস্টার ক্যাপাসিটর (Polyeater Capacitor)
• এয়ার গ্যাপ ক্যাপাসিটর ( Air gap Capacitor) • মাইকা ক্যাপাসিটর (Mica Capacitor)
• সিরামিক ক্যাপাসিটর (Ceramic Capacitor) • ইলেকট্রোলাইটিক ক্যাপাসিটর (Electroline Capacitor)
ভ্যারিয়েবল ক্যাপাসিটর তিন প্রকার-
• ট্রিমার ক্যাপাসিটর (Tremer Capacitor) • গ্যাং ক্যাপাসিটর (Gang Capacitor)
• প্যাডার (Padder Capacitor)
ক্যাপাসিটরের ব্যবহার
• রেডিও, টেলিভিশনের টিউনিং সার্কিটে
• ডি কাপলিং বাইপাস সার্কিটে
• অসিলেটর এবং ফ্রিকোয়েন্সি ডিটারমিনিং সার্কিটে
• বিভিন্ন সার্কিটে বিদ্যুৎ সঞ্চয় করে রাখার জন্য
• ইলেকট্রনিক্স সার্কিটে ফিল্টার হিসেবে
• ইলেকট্রিক্যাল মোটরের স্টার্টিং টর্ক উৎপন্ন করার জন্য এবং মোটরের ফেজ এ্যাঙ্গেল পরিবর্তন করার জন্য ক্যাপাসিটর ব্যবহার করা হয়
ক্যাপাসিটর টেষ্ট
ওহম মিটারের সাহায্যে ক্যাপাসিটর টেষ্ট করা হয়। ক্যাপাসিটর কম মানের হলে মিটার উচ্চ রেঞ্জে সেট করতে হবে। আর ক্যাপাসিটর উচ্চ মানের হলে ওহম মিটারের নবটি কম রেঞ্জে সিলেক্ট করতে হবে। এবার মিটারের প্রোবদু'টি ক্যাপাসিটরের দুই টার্মিনালে সংযুক্ত করলে বেশি মানের ক্যাপাসিটরের ক্ষেত্রে মিটারের পয়েন্টারের ডিফ্লেকশন বেশি এবং কম মানের ক্যাপাসিটরের ক্ষেত্রে মিটারের পয়েন্টারের ডিফ্লেকশন কম হবে। ওহম মিটারের কাঁটা দ্রুত ডিফ্লেকশন দেয়ার পর যদি আস্তে আস্তে অসীম স্থানে আসে তাহলে বুঝতে হবে ক্যাপাসিটর ভাল আছে । যদি দ্রুত আসীম চলে আসে তাহলে বুঝতে হবে ক্যাপাসিটরে লিকেজ আছে। আর যদি একেবারে না আসে তাহলে বুঝতে হবে ক্যাপাসিটর শর্ট আছে ।
কোন পরিবাহী তারের কুন্ডলীকে ইন্ডাক্টর বলে। তাই কয়েলের আর এক নাম ইন্ডাক্টর। এই কুন্ডলী যদি কোন
চৌম্বক পদার্থের উপর জড়ানো হয় তাহলে তার ইন্ডাক্টেন্স বা আবেশাঙ্ক বেড়ে যায়। আবেশাঙ্ক হচ্ছে কোন এক যন্ত্রাংশ বা সার্কিটের এমন একটা ধর্ম, সেখানে তড়িৎ প্রবাহের কোন রকম তারতম্য ঘটলে তাতে সে বাধার সৃষ্টি করে। কারণ এ ধরনের পরিবর্তন চৌম্বক-ক্ষেত্রের তীব্রতর তারতম্য ঘটায়। ইন্ডাক্টরের একক হেনরী। হেনরীকে সংক্ষেপে H লেখা হয়। ইন্ডাক্ট্যান্সকে L দিয়ে প্রকাশ করা হয়। কোন কয়েলের ইন্ডাক্টেন্স ১ হেনরী তখনই বলা হবে, যখন তার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট সেকেন্ডে ১ অ্যাম্পিয়ার হারে পরিবর্তিত হবে এবং ১ ভোল্টের একটা তড়িৎ চালক বলকে আবিষ্ট করবে।
ইন্ডাক্ট্যান্স (Inductance)
ইন্ডাক্ট্যান্স বা আবেশাঙ্ক হচ্ছে ইন্ডাক্টরের ধর্ম, যার জন্য সে এসি (A.C) কারেন্টের কোন রকম পরিবর্তনে বাধার সৃষ্টি করে। সুতারং ইন্ডাক্টরের প্রবনতা হচ্ছে অল্টারনেটিং কারেন্টকে বাধা দেয়া। কিন্তু ডাইরেক্ট কারেন্টের (D.C) উপর এর কোন প্রভাব নেই। এর ভেতর দিয়ে ডিসি বিনা বাধায় যেতে পারে।
ইন্ডাক্টেন্স = ফ্লাক্স পিকেল/কারেন্ট উৎপাদক ফ্রান্স × ১০* হেনি
ইন্ডাক্টরের প্রকারভে
• কোর মেটারিয়াল এয়ার কোর বা আয়রন কোর
• গ্রিকোরেপী- অডিও বা রেডিও
• প্রয়োগ পাওয়ার সাপ্লাই ফিল্টার, পিকিং কয়েল, লিনিয়ারিটি কয়েল ইত্যাদি -
• ওয়্যাইন্ডিং এর পদ্ধতি - সিঙ্গেল লেয়ার, মাল্টি লেয়ার, পেঙ্কো, পাই সেক্সান ইত্যাদি
ইন্ডাক্টরের ইন্ডাস্ট্যাল নিচে উল্লেখিত বিষয়ের উপর নির্ভর করে
• কয়েলের ভারের প্যাচের সংখ্যার উপর
• কয়েলের আকৃতি ও আয়তনের উপর
• প্রতি প্যাচের মধ্যে দূরত্বের উপর এবং
• কয়েলের মধ্যে অবস্থানরত পদার্থের উপর
ইন্ডাক্টরের ব্যবহার
রেডিও, টেলিভিশন, টুইন ওয়ান ইত্যাদির আর এফ করেন (RF Coil), আই এফ কয়েলে (IP Coil) এবং অসিলেটর করেল হিসেবে ব্যবহার করা হয়
• রিলে, ওয়াট মিটারে, অ্যামিটারে, ঢোক করেল হিসেবে এবং বৈদ্যুতিক চুম্বক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়
ইলেকট্রনিক্সে ডায়োড একটি দুই প্রাপ্ত বিশিষ্ট উপাদান যা বিদ্যুৎ প্রবাহকে কোন নির্দিষ্ট এক দিকে প্রবাহিত করে এবং বিপরীত দিকের বিদ্যুৎ প্রবাহকে বাধা প্রদান করে। ডায়োড বলতে মূলত সেমিকন্ডাক্টর ডায়োডকেই বোঝানো হয়।
সেমিকন্ডাক্টর ভারো
একটি পি টাইপ এবং একটি এন টাইপ সেমিকন্ডারের সমন্বয়ে এই ডিভাইস তৈরি হয়। এই পি এবং এন টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের সংযোগ স্থলকে জাংশন (সি- এন জাংশন) বলে। পি-এন জাংশনে প্রচলিত অর্থে ভড়িৎ প্রবাহের দিক হচ্ছে পি টাইপ সেমিকন্ডাক্টর থেকে এন টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের দিকে। এর বিপরীত দিকে তড়িৎ প্রবাহিত হতে পারে না। এই ডিভাইস তৈরি করার জন্য অর্ধপরিবাহী হিসেবে সিলিকন এবং জার্মেনিয়াম ব্যবহার করা হয়।
ডায়োডের শ্রেণি বিভাগ
• জেনার ডায়োড: বিভব নিয়ন্ত্রন করার কাজে, এনালগ এবং ডিজিটাল সার্কিটে ব্যবহার করা হয়। • ভ্যারাকটর ডায়োড টিভি এবং রেডিও টিউন কারার জন্য ব্যবহার করা হয়।
• লাইট ইমেটিং ডারোড কাউন্টার, ক্যালকুলেটর, ডিজিটাল ঘড়ি এবং যে সমস্ত ক্ষেত্রে দৃশ্য এবং অদৃশ্য আলোর ব্যবহার হয় সেই সকল স্থানে এটি ব্যবহৃত হয়।
• ফটো ভারোড: আলো বা ভাপ পরিমাপের কাজে, সূর্যের আলোকে কারেন্টে রূপান্তর করে ব্যাটারী চার্জ করার কাজে, সিনেমা ফিল্মে আলোর তীব্রতা দ্রুত পরিবর্তন করার কাজে ফটো ডায়োড ব্যবহৃত হয়।
ভারোডের কার্যপ্রণালী: একটি ডায়োডের মধ্যদিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হবে কিনা তা নির্ভর করে তার উপর প্রযুক্ত বহি ভোল্টেজের উপর যা দুই ভাবে হতে পারে-
• সম্মুখী ঝোঁক বা ফরোয়ার্ড বায়াস
• বিমুখী ঝোঁক বা রিভার্স বারাস
সম্মুখী ঝোঁক (Forward Bias)
বহি ভোল্টেজ যদি এমন ভাবে প্রয়োগ করা হয় যেন, বিদ্যুৎ উৎসের ধনাত্বক প্রাপ্ত ডায়োডের পি প্রান্তের সাথে এবং বিদ্যুৎ উৎসের ঋনাত্বক প্রাপ্ত ডায়োডের এন প্রাপ্তের সাথে যুক্ত থাকে তবে তাকে সম্মুখী ঝোঁক বা ফরোয়ার্ড বায়াস বলে।
বিমুখী ঝোঁক (Reverse Bias)
বহিস্থ ভোল্টেজ যদি এমন ভাবে প্রয়োগ করা হয় যেন, বিদ্যুৎ উৎসের ঋনাত্বক প্রাপ্ত ডায়োডের পি প্রান্তের সাথে এবং বিদ্যুৎ উৎসের ধনাত্বক প্রাপ্ত ডায়োডের এন প্রাপ্তের সাথে যুক্ত থাকে তবে তাকে বিমুখী ঝোঁক বা Reverse Bias বলে।
ডায়োডের ব্যবহার
রেন্টিফিকেশন সার্কিটে রেক্টিফায়ার হিসেবে, ডিটেকশন এবং রিভার্স ভোল্টেজ প্রোটেকশনের কাজে এটিকে ব্যবহার করা হয় । তাছাড়া ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার বা ভোল্টেজ রেগুলেটরে, ভোল্টেজ প্রোটেকশন বা সেফটি ডিভাইস হিসেবে, ইলেকট্রনিক কন্ট্রোলিং ডিভাইস এবং সার্জ ভোল্টেজ নিয়ন্ত্রনের জন্য লিমিটার হিসেবে জেনার ডায়োড ব্যবহার করা হয়। এসি ভোল্টেজকে পালসেটিং ডিসি ভোল্টেজে রূপান্তর করার জন্য ডায়োড ব্যবহার করা হয়।
ট্রান্সফরমার হচ্ছে এমন একটি ডিভাইস যার সাহায্যে কোন ফ্রিকোয়েন্সীর পরিবর্তন না করেই এবং কোন রকম সংস্পর্শ ছাড়াই বৈদ্যুতিক শক্তিকে একটি এসি সার্কিট হতে অন্য একটা এসি সার্কিটে পাঠান যায় ।
ট্রান্সফরমারের প্রকারভেদ
গঠন অনুযায়ী ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে । যথা
• কোর টাইপ ট্রান্সফরমার • সেল টাইপ ট্রান্সফরমার
আবার কাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে একে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন-
• স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার • আই, এফ ট্রান্সফরমার
• স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার • পাওয়ার ট্রান্সফরমার
• ড্রাইভার ট্রান্সফরমার • ফ্লাইব্যাক ট্রান্সফরমার
• অটো ট্রান্সফরমার • ভোল্টেজ ট্রান্সফরমার
• ইনপুট ট্রান্সফরমার • কারেন্ট ট্রান্সফরমার
• আউটপুট ট্রান্সফরমার
স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার
যে ট্রান্সফরমারের প্রাইমারীতে কম ভোল্টেজ প্রয়োগ করে সেকেন্ডারী হতে বেশী ভোল্টেজ পাওয়া যায় তাকে ট্রান্সফরমারকে স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার বলে ।
স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার
যে ট্রান্সফরমারের প্রাইমারীতে বেশী ভোল্টেজ প্রয়োগ করে সেকেন্ডারী হতে কম ভোল্টেজ পাওয়া যায় তাকে স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার বলে
স্টেপ আপ ও স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমারের তুলনামূলক বৈশিষ্ট্য-
স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার | স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার |
---|---|
১. প্রাইমারী ভোল্টেজ কম, কারেন্ট বেশী। | ১. প্রাইমারী ভোল্টেজ বেশী, কারেন্ট কম। |
২. সেকেন্ডারী ভোল্টেজ বেশী, কারেন্ট কম। | ২. সেকেন্ডারী ডোস্টেজ কম, কারেন্ট বেশী। |
৩. প্রাইমারী Winding এর Turn সংখ্যা কম । সেকেন্ডারী Winding এর Turn সংখ্যা বেশী। | ৩. প্রাইমারী Winding এর Turn সংখ্যা বেশী সেকেন্ডারী Winding এর Turn সংখ্যা কম। |
৪. প্রাইমারী Winding এর তার মোটা। সেকেন্ডারী Winding এর তার চিকন। | ৪. প্রাইমারী Winding এর তার চিকন। সেকেন্ডারী Winding এর তার মোটা। |
৫. প্রাইমারী Winding এর Resistance কম। | ৫. প্রাইমারী Winding এর Resistance বেশী। |
একটি পি টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের উত্তর পাশে এন টাইপ অথবা একটি এন টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের উত্তর পাশে পি টাইপ সেমিকন্ডাক্টর যুক্ত করে যে ডিভাইস তৈরি করা হয় তাকে ট্রানজিস্টর বলে (পাশের চিত্র দ্রষ্টব্য)। Transfer of Resistor কথাটি থেকে ট্রানজিস্টর নামের উৎপত্তি হয়েছে। এটি এমন এক ধরনের রেজিস্টর বা ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালকে বিবর্ধিত করতে পারে এবং ইনপুটের সিগন্যালকে আউটপুটে পাঠাতে পারে। ট্রানজিস্টরের তিনটি টার্মিনাল থাকে বা ইমিটার, বেজ এবং কালেক্টর নামে পরিচিত।
ট্রানজিস্টরের শ্রেণি বিভাগ
পোলারিটির উপর ভিত্তি করে ট্র্যাজিস্টরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
• বাইপোলার জাংশন ট্রানজিস্টর (BJT) • ইউনিপোলার সলিড স্টেট ট্রানজিস্টর
বাইপোলার জংশন ট্রানজিস্টর কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়-
• পি এন পি ট্রানজিস্টর (PNP) • এন পি এন ট্রানজিস্টর (NPN)
ইউনিপোলার ট্রানজিস্টরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়-
• JFET (Junction Field Effect Transistor)
• MOSFET (Metal Oxide Semiconductor Field Effect Transistor).
ট্রানজিস্টর বারাসিং
ট্রানাজিস্টরকে কার্যক্ষম করার জন্য এতে বিশেষ নিয়মে ভোল্টেজ প্রয়োগ করতে হয় এই বিশেষ নিয়মে ট্রানজিস্টরে ভোল্টেজ প্রয়োগ করাকে ট্রানজিস্টর বায়াসিং বলে।
বায়াসিং এর শর্ত
• ইমিটার বেজ সব সময় ফরোয়ার্ড বায়াস হবে
• বেজ কালেক্টর সব সময় রিভার্স বায়াস হবে
• পি এন পি এবং এন পি এন উভয় ধরনের ট্রানজিস্টরের ক্ষেত্রে এই শর্ত প্রযোজ্য
ট্রানজিষ্টরের ব্যবহার
• ইলেকট্রনিক্স সুইচিং এ • এ্যামপ্লিফায়ার হিসেবে
• অসিলেটরে • ইনভার্টার
• সেন্সরে এটি ব্যাবহৃত হয়
শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ
আরএসি এর কাজে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্টের নাম ও এদের প্রতীকসহ তালিকা প্রস্তুত কর।
পদ্ধতি
প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সহকারে স্টোররুমের সব ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম ও কম্পোনেন্ট থেকে আরএসি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও কম্পোনেন্ট বাছাই করি এবং নিচের টেবিলে তথ্য গুলো সাজিয়ে পর্যালোচনা করি । কাজ শেষে পরিষ্কার করি ও যথা স্থানে মালামাল গুছিয়ে রাখি।
ক্রমিক নং | কম্পোনেন্টের নাম | কম্পোনেন্টের স্পেসিফিকেশন | কম্পোনেন্টের প্রতীক | টুলসের নাম | টুলসের চিত্র | ফলাফল |
---|---|---|---|---|---|---|
এই শিখন ফলে আমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার প্রয়োজনীয় Cleaning Materials এর চিত্রসহ নাম জানতে
পারব।
কাজ শুরু করার আগে এবং পরে কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য বিভিন্ন ধরণের ক্লিনিং ইকুইপমেন্ট পাওয়া যায় । কার্যকারী ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করলে অতি অল্প সময়ে কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব
২.৮.১ Cleaning Material এর নামসহ চিত্র দেয়া হল-
পারদর্শিতার মানদন্ড • স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা (পিপিই) পরিধান করা |
(ক) ব্যাক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
সার্কিট ডায়াগ্রাম অঙ্কন কর ও সেঅনুযায়ী সংযোগ স্থাপন করো ।
২. সম্পুর্ণ সার্কিটটি পুনরায় চেক করো।
৩. হোল্ডারে বাল্বগুলো স্থাপন করো ।
৪. সার্কিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করো ।
৫. ক্লিপ অন মিটার/এ্যাভো মিটারের সাহায্যে ইনফরমেশন শিটের ২.২.৯ অনুসরণ করে কারেন্ট, ভোল্টেজ
ও রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করো ।
৬. সার্কিটের ফলাফল যাচাই করতে ইনফরমেশন/তাত্ত্বিক শিট ২.৫.৩ এর বৈশিষ্টের সাথে মিলিয়ে দেখ ।
আত্নপ্রতিফলন
সিরিজ সার্কিট তৈরি করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।
পারদর্শিতার মানদন্ড • স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা (পিপিই) পরিধান করা • অব্যবহৃত মালামাল নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করা |
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
(ণ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ট্রেন্সস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন)
(গ) মালামাল (Raw Materials)
১. সার্কিট ডায়াগ্রাম অঙ্কন কর সেঅনুযায়ী সংযোগ স্থাপন কর।
২. সম্পুর্ন সার্কিটটি পুনরায় চেক করো।
৩. হোল্ডারে বাল্বগুলো স্থাপন করো।
৪. সার্কিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করো ।
৫. ক্লিপ অন মিটার/অ্যাভো মিটারের সাহায্যে ইনফরমেশন শিটের ২.২.৯ অনুসরণ করে কারেন্ট, ভোল্টেজ
ও রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করো । ৬. সার্কিটের ফলাফল যাচাই করতে ইনফরমেশন/তাত্ত্বিকশিট ২.৫.৪ এর বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলিয়ে দেখ ৷
কাজের সতর্কতা • অবশ্যই নিরাপত্তা মূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করে কাজ করতে হবে |
আত্নপ্রতিফলন
প্যারালাল সার্কিট তৈরি করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।
পারদর্শিতার মানদন্ড • স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা (পিপিই) পরিধান করা |
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন)
(ঘ) কাজের ধারা
১. সার্কিট ডায়াগ্রাম অঙ্কন করো ।
২. সার্কিটে ডায়াগ্রাম অনুযায়ী ফিউজ, সুইচ, হোল্ডার সংযোগ করো ।
৩. আবার সার্কিটটি পুনরায় চেক করো।
৪. হোল্ডারে বাল্বগুলো স্থাপন করো ।
৫. সার্কিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করো ।
৬. ক্লিপ অন মিটার/এ্যাভো মিটারের সাহায্যে ইনফরমেশন শিটের ২.২.৯ অনুসরণ করে কারেন্ট, ভোল্টেজ ও রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করো । ৫. সার্কিটের ফলাফল যাচাই করতে ইনফরমেশন/তাত্ত্বিক শিট ২.৫.৩ ও ২.৫.৪ এর বৈশিষ্ট্যর সাথে মিলিয়ে
দেখ ।
কাজের সতর্কতা • অবশ্যই নিরাপত্তা মূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করে কাজ করতে হবে |
আত্নপ্রতিফলন
মিশ্র সার্কিট তৈরি করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।
পারদর্শিতার মানদন্ড • স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা (পিপিই) পরিধান করা • সার্কিটের কারেন্ট, ভোল্টেজ ও রেজিস্ট্যান্স, পরিমাপ করা |
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
২. সার্কিটে ডায়াগ্রাম অনুযায়ী প্রত্যেকটি পার্টস সংযোগ করো ।
ক. ২ পিন প্লাগের দুই টার্মিনালে ফেজ ও নিউট্রাল তার যুক্ত করো;
খ. ফেজ তার টি থার্মোস্টার্টের প্রথম প্রাস্তে সংযোগ করো;
গ. দ্বিতীয় প্রাপ্ত থেকে ওভার লোড প্রটেক্টরের প্রথম প্রান্তে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো;
ঘ. ওভার লোডের অপর প্রান্ত থেকে কম্প্রেসরের কমন টার্মিনালে যুক্ত করো;
ঙ. কম্প্রেসরের স্টার্টিং ও রানিং টার্মিনালে একটি পিটিসি/কারেন্ট করেন রিলে যুক্ত করো;
চ. পিটিসি/কারেন্ট করেন রিলের রানিং প্রাপ্ত নিউট্রাল লাইনের সাথে যুক্ত করো;
ছ. এবার থার্মোস্টাটের প্রথম প্রান্তের ফেজ তার থেকে একটি তার নিয়ে ডোর সুইচের এক প্রান্তে যুক্ত
কর;
জ. ডোর সুইচের অপর প্রান্ত থেকে ডোর ল্যাম্প হোল্ডারের এক প্রান্তে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো;
ঝ. ডোর ল্যাম্প হোল্ডারের অপর প্রান্তে নিউট্রাল লাইন যুক্ত করো ।
৩. সার্কিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করো ।
ক. আবার সার্কিটটি চেক করো;
খ. হোল্ডারে বাল্ব স্থাপন করো;
গ. সাপ্লাই এর সাথে যুক্ত করে সুইচ অন করো;
৪. কারেন্ট, ভোল্টেজ ও রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করো ।
ক. ক্লিপ অন মিটার/এ্যাভো মিটারের সাহায্যে ইনফরমেশন শিটের ২.২.৯ অনুসরণ করে কারেন্ট,
ভোল্টেজ ও রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করো ।
কাজের সতর্কতা • অবশ্যই নিরাপত্তা মূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করে কাজ করতে হবে |
আত্নপ্রতিফলন
ফ্রষ্ট টাইপ রেফ্রিজারেটরের ইলেকট্রিক সার্কিট তৈরি করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন
করতে হবে।
পারদর্শিতার মানদন্ড • স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা (পিপিই) পরিধান করা • সার্কিটের কারেন্ট, ভোল্টেজ ও রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করা |
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
(গ) কাজের ধারা
১. সার্কিট ডায়াগ্রাম অঙ্কন করি
২. সার্কিটে ভায়াগ্রাম অনুযারী প্রত্যেকটি পার্টস সংযোগ কর।
ক. ২ পিন প্লাগের দুই টার্মিনালে ফেজ ও নিউট্রাল তার যুক্ত করো: খ. ফেজ তার টি থার্মোস্টাটের প্রথম প্রান্তে সংযোগ করো;
গ. দ্বিতীয় প্রায় থেকে ওভার লোড প্রটেক্টরের প্রথম প্রাচ্ছে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো;
ঘ. ওঙ্কার লোডের অপর প্রাপ্ত থেকে কম্প্রেসরের কমন টার্মিনালে যুক্ত করো; ড. কম্প্রেসরের স্টার্টিং ও রানিং টার্মিনালে একটি পিটিসি/কারেন্ট কয়েল রিলে যুক্ত করো;
চ. পিটিসি/কারেন্ট কয়েল রিলের রানিং প্রাপ্ত নিউট্রাল লাইনের সাথে যুক্ত করো;
ছ. এবার থার্মস্টার্টের প্রথম প্রান্তের ফেজ তার থেকে একটি তার নিয়ে ডোর সুইচের এক প্রান্তে যুক্ত করো; জ. ডোর সুইচের অপর প্রাপ্ত থেকে ডোর ল্যাম্প হোল্ডারের এক প্রাদ্ধে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো।
ঝ. ডোর ল্যাম্প হোন্ডারের অপর প্রাপ্তে নিউট্রাল লাইন যুক্ত করো;
ঞ. ডি-ফ্রষ্ট হিটারকে থার্মোস্টাটের দুই প্রান্ধে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো ।
৩. সার্কিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করো।
ক. আবার সার্কিটটি চেক করো;
খ. হোল্ডারে বাল্ব স্থাপন করো;
গ. সাপ্লাই এর সাথে যুক্ত করে সুইচ অন করো।
৪. কারেন্ট, ভোল্টেজ ও রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করো ।
ক. ক্লিপ অন মিটার/এ্যাভো মিটারের সাহায্যে ইনফরমেশন পিটের ২.২.১ অনুসরণ করে কারেন্ট, ভোজে ও রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করো।
কাজের সতর্কতা • অবশ্যই নিরাপত্তা মূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করে কাজ করতে হবে • কাজটি করতে কোন প্রকার অসুবিধার সম্মুখীন হলে অবশ্যই শিক্ষক/ট্রেইনারকে জানাতে হবে |
আত্নপ্রতিফলন
ডি-ফ্রষ্ট টাইপ রেফ্রিজারেটরের ইলেকট্রিক সার্কিট তৈরি করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন
করতে হবে।
পারদর্শিতার মানদন্ড • স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা (পিপিই) পরিধান করা |
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
২. সার্কিটে ডায়াগ্রাম অনুযায়ী প্রত্যেকটি পার্টস সংযোগ কর।
ক. ২ পিন প্লাগের দুই টার্মিনালে ফেজ ও নিউট্রাল তার যুক্ত করো;
খ. ফেজ তারটি থার্মস্টাটের প্রথম প্রান্তে সংযোগ করো; গ. দ্বিতীয় প্রান্ত টাইমার মোটরের ইন/ফেজ টার্মিনালে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো;
ঘ. টাইমার মোটরের কম্প্রেসর টার্মিনাল হতে ওভার লোড প্রটেক্টরের প্রথম প্রান্তে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো; ঙ. ওভার লোডের অপর প্রান্ত থেকে কম্প্রেসরের কমন টার্মিনালে যুক্ত করো;
চ. কম্প্রেসরের স্টার্টিং ও রানিং টার্মিনালে একটি পিটিসি/কারেন্ট কয়েল রিলে যুক্ত করো;
ছ. পিটিসি/কারেন্ট কয়েল রিলের রানিং প্রান্ত নিউট্রাল লাইনের সাথে যুক্ত
জ. টাইমার মোটরের হিটার টার্মিনাল হতে থার্মাল ফিউজের প্রথম প্রান্তে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো; ঝ. থার্মাল ফিউজের অপর প্রান্ত কুলিং ওভার লোডের প্রথম প্রান্তে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো;
ঞ. কুলিং ওভার লোডের অপর প্রান্ত ডি ফ্রস্ট হিটারের প্রথম প্রান্তে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো; ট. ডি ফ্রস্ট হিটারের অপর প্রান্ত নিউট্রাল লাইনের সাথে যুক্ত করো;
ঠ. টাইমার মোটরের নিউট্রাল টার্মিনালকে থার্মাল ফিউজের দ্বিতীয় প্রান্তে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো; ড. থার্মস্টাটের প্রথম প্রান্ত থেকে কেবিনেট হোল্ডারের এক প্রান্তে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো;
ঢ. কেবিনেট হোল্ডারের অপর প্রান্ত ডোর সুইচের ল্যাম্প পয়েন্টে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো;
ণ. ডোর সুইচের ফ্যান পয়েন্ট হতে ফ্যানের নিউট্রাল পয়েন্টে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো;
ত. ওভার লোড প্রটেক্টরের প্রথম প্রান্ত হতে ফ্যানের ফেজ পয়েন্টে তারের মাধ্যমে যুক্ত করো;
থ. ডোর সুইচের কমন প্রান্ত নিউট্রাল লাইনের সাথে যুক্ত করো।
৩. সার্কিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করো।
ক. আবার সার্কিটটি চেক
খ. হোল্ডারে বাল্ব স্থাপন করো;
গ. সাপ্লাই এর সাথে যুক্ত করে সুইচ অন করো ।
৪. কারেন্ট, ভোল্টেজ ও রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করো
ক. ক্লিপ অন মিটার/অ্যাভো মিটারের সাহায্যে ইনফরমেশন শিটের ২.২.৯ অনুসরণ করে কারেন্ট, ভোল্টেজ
ও রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করো ।
কাজের সতর্কতা • অবশ্যই নিরাপত্তা মূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করে কাজ করতে হবে |
আত্নপ্রতিফলন
নো-ফ্রষ্ট/ফ্ৰষ্ট ফ্রি টাইপ রেফ্রিজারেটরের ইলেকট্রিক সার্কিট তৈরি করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে ।
পারদর্শিতার মানদন্ড • স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা (পিপিই) পরিধান করা |
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
২। সার্কিটে ডায়াগ্রাম অনুযায়ী ভায়োড, ক্যাপাসিটর, ট্রান্সফরমার সংযোগ করো।
. দু'টি ডায়ডের অ্যানোড, অপর দুইটি ডায়ডের ক্যাথোড আলাদা আলাদা সংযোগ করো:
খ. দুই সেট ডায়োডের খোলা প্রাপ্ত গুলি দু'টি দু'টি করে সংযোগ
গ. যে দুই প্রাপ্তে অ্যানোড- অ্যানোড এবং ক্যাথোড-ক্যাথোড সংযোগ হয়েছে সেই দুই প্রাপ্ত থেকে আউটপুট
নাও;
গ. যে দুই প্রাপ্তে অ্যানোড ক্যাথোড সংযোগ হয়েছে সেই দুই প্রান্তে ট্রান্সফরমারের স্টেপ ডাউন প্রান্তগুলো সংযোগ করো;
৩। আবার সার্কিটটি চেক কর।
ক. ট্রান্সফরমারের স্টেট্স আপ গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ দাও;
খ. মিটারের সাহায্যে সার্কিটের আউটপুট পর্যবেক্ষন করো।
কাজের সতর্কতা • অবশ্যই নিরাপত্তা মূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করে কাজ করতে হবে।
|
আত্মপ্রতিফলন
ফুল ওয়েভ ব্রিজ রেক্টিফিকেশন সার্কিট তৈরি করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।
পারদর্শিতার মানদন্ড স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা (পিপিই) পরিধান করা |
(গ) কাজের ধারা
১। সার্কিট ডায়াগ্রাম অঙ্কন করো। ২। সিরিজ সার্কিট তৈরি করো।
ক. একটি রেজিস্টরকে ব্রেড বোর্ডের A1ও A4 পয়েন্টে যুক্ত কর;
খ. একটি LED কে ব্রেড বোর্ডের B4 ও B6 পরেন্টে যুক্ত কর; গ. অন্য আরেকটি রেজিস্টরকে ব্রেড বোর্ডের A6 ও A8 পয়েন্টে
যুক্ত কর খ. অন্য LED কে ব্রেড বোর্ডের BS ও B10 পয়েন্টে যুক্ত কর;
৫. এবার ফেজ লাইনটি C1 ও নিউট্রাল লাইনকে C10 পয়েন্টে যুক্ত
কর;
৩। প্যারালাল সার্কিট তৈরি কর।
ক. একটি LED কে ব্রেড বোর্ডের A1 ও A4 পয়েন্টে যুক্ত কর; খ. অন্য একটি LED কে ব্রেড বোর্ডের B1 B4 পয়েন্টে যুক্ত
কর
গ. একটি রেজিস্টরকে ব্রেড বোর্ডের C4 ও নিউট্রাল লাইনের সাথে
যুক্ত কর; ম. ব্রেড বোর্ডের C1 এ ফেজ লাইন যুক্ত করো।
কাজের সতর্কতা • অবশ্যই নিরাপত্তা মূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করে কাজ করতে হবে |
আত্মপ্রতিফলন
ব্রেড বোর্ডে সিরিজ ও প্যারালাল সার্কিট তৈরি করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।
Read more